Tuesday, April 7, 2020

কবিতা

প্রেমিকা ই বারবণিতা

অতঃপর,
জগৎ এর সমস্ত প্রেমিকাকে একত্র করা হলো।

তারপর, 
     একজন কবিকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করিয়ে, 
      তার শেষ বক্তব্য বলতে বলা হলো। 

             কবি দিশেহারা হননি , 
গহীন অরণ্যে গাছের ছায়া ভেদ করে যেমন 
সূর্যের তীর্যক রশ্মি কে ঝলক দিতে দেখা যাই। 
তেমনি উজ্জ্বল আর প্রাণবন্ত হাসি হেঁসে, 
           তিনি বলতে শুরু করলেন। 

এখানে উপস্থিত সকল প্রেমিকাদ্বয়, 
     তোমরা আমার বড় প্রিয়। 
তোমাদের হাসি আমার কাছে, 
সাগরের বুকে সূর্য উদয়ের মতো। 
তোমাদের একবিন্দু চোখের জল, 
দূর্বা ডগাতে জমে থাকা শিশির বিন্দুর মতো। 

আমি তোমাদের বড় ভালোবাসি 
তাই তো মৃত্যু মঞ্চে,
 তোমাদের কে একটা কথা বলতে আসা। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
খাতা কলম নাও। 

আমার হাতে সময় বড় অল্প,  
তোমাদের দেবার কিছুই নেই আমার 
আমি রিক্ত আমি শূন্য। 
চেয়ে দেখো-
কালো কাপড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে আমার চোখ। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
খাতা কলম নাও। 

আমার হাতে সময় বড় অল্প,
আমার কন্ঠনালীতে র‍য়েছে রশি, 
শুনেছি অনেক মূল্য এই রশির। 
কি আশ্চর্য, আমাকে মারতে এতো আয়োজন! 
অথচ আমি প্রেমিক, আমার মৃত্যু নেই 
আমার যন্ত্রণা আছে, কিন্তু নিঃশেষ হবার ভয় নেই
দহন জ্বালা আছে, ভশ্ম হবার ভয় নেই 
কারণ আমি তোমাদের প্রেমিক। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
তোমরা কি জানো 
আমার মৃত্যু দন্ডের কারণ? 

জানার প্রয়োজন নেই, 

কারণ বারবণিতা দের জানার প্রয়োজন হয় না।

গন্তব্য

আমার গন্তব্য!
সে তো ঈশ্বর নির্ধারিত।
আমি শুধু চলতে জানি।
পড়ন্ত কোন এক বিকালে
যেখানে জ্বলন্ত সূর্য কে গিলে খায় সমুদ্র
পৃথিবীতে নেমে আসে সন্ধ্যা।
তেমনি কোন এক সন্ধ্যাতে
আমি রাজ অতিথি! 
আর তুমি, 
আমার সে শরাবের উৎসবে নিছক এক নর্তকী। 
কি আশ্চর্য তাই না! 
আমার যাযাবর জীবন, 
আমাকে দান করেছে রাজ অতিথির সম্মান। 
আর, তোমার অপার সৌন্দর্য 
তোমাকে করেছে রাজ রক্ষিতা।। 
দুই হাত উচিয়ে আশীর্বাদ প্রিয়ে -
চির যৌবনবতী হও, 
প্রতিটি রাত হোক তোমার অভিশপ্তময়। 
সকলে সুখী হোক, তোমার সুধা গ্রহণে। 
তুমি মেকি হাসির পর্বত গড়ে, 
অশ্রুবিসর্জন দাও, একা চির একাকীত্বে।

বিরহ

প্রেমিক পাগল
০৫/০৪/২০

তুমি চলে যাবার পর,
চাঁদটা ম্লান হয়ে গেছে।
ঠিকরে পড়া জ্যোৎস্নায় কোন মায়া নেই।

তুমি চলে যাবার পর
মহল্লায় মহল্লায় বিরহের সুর
ডাহুকেরা কান্নায় হয়েছে বিভোর।

গোলাপ ফোঁটে
তবে আগের সেই রূপ হারিয়েছে।
তুমি চলে যাবার পর
এক গ্যালাক্সি শূন্যতা বুকে বাসা বেধেছে।

বৃষ্টি ঝরে অঝর ধারায়, 
তুমি চলে যাবার পর 
আকাশ টা শুধুই কাঁদে। 

ঘুঘু আর্তনাদ করে, 
হুতোম প্যাঁচার বীভৎসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোকিল গান ছেড়ে দিয়েছে। 

তুমি চলে যাবার পর 
নদীর বুকে আর জোয়ার আসেনি, 
চাঁদে চাঁদে এতো গ্রহ 
এক জম্মে কেউ তা দেখেনি। 

কবিতা, কবির অন্তর জুড়ে শূন্যতা 
সাহারা মরুর মত ধূ-ধূ বালুর চর জমেছে
আর কোন কবিতাতে কবি মুগ্ধ হয়নি। 

এতো বর্ষা, এতো বর্ষা তবুও দেখো 
নেই এতটুকু সজীবতা। 

তুমি চলে যাবার পর,
 আর কোন বৃক্ষে 
বসন্ত আসেনি । 
পাতাঝড়া বৃক্ষে এখন 
নিদারুণ তুমি হীনতা। 
এখন কবির কাব্য জুড়ে
চাষাবাদ হয় বিষন্নতা। 

তবুও হাসি পাই 
পাগল না হলে কি-
আর প্রেমিক হওয়া যায়? 
প্রেমিক মাত্রই পাগল হওয়া চায়!

( অরণ্য_নাসিদ)