প্রিয় বন্ধু,
গোলাকার এই পৃথিবীটা যতটা না বড় তার চেয়ে অধিক ছোট। আর সে কারণে তোমার আমার দেখা হয়ে যাওয়াটা খুব অলৌকিক ভেবো না। এখন যতটা সম্ভব পরিচিত মুখ এড়িয়ে চলি। তার যথেষ্ট কারণ আছে। অন্য কোন একদিন বলবো না হয়। কোথায় আছি আর কেমন আছি? এই প্রশ্নের উত্তর, না জানা থাক। মধ্যরাতের আকাশের দিকে চেয়ে আছি। অভিযোগের খাতাতে, আমার নামে প্রতিনিয়ত অভিযোগ জমা হচ্ছে। আমিও বড় একগুঁয়ে আচরণের নিজেকে তৈরি করে নিয়েছি । তাই ওই খাতা খুলে দেখা হয় না, কে কি অভিযোগ করলো।
আমার নামে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছিল যে দিন, তা আর কিছু না। আমি নাকি বড় সেকালের। আমার মাঝে আধুনিকতা নেই। নেই ভদ্রতা, নেই কোন গুণাগুণ। আমি নাকি ভালোবাসার মর্ম জানিনা।
সব মাথা পেতে নিয়েছিলাম, একটা অভিযোগ মাথা পেতে মেনে নিতে পারেনি।
কারণ ভালোবাসতে জানি আমি,
উজাড় করে ভালোবাসতে শিখেছি। কারণ ভালোবাসতে শিখিয়েছিলো আমার প্রকৃতি, আর প্রকৃতি কখনো ভালোবাসার মাঝে খাদ রাখতো না।
বন্ধু, তুমি হয়তো জানো না। সে কেনো এসেছিলো আমার বাহুডোরে! তার খুব ইচ্ছে ছিলো তার রূপকে কাব্যের স্বর্গে লিখে দিয়ে যাক কেউ। তার শরীর কে বর্ণনা করুক কেউ। সে লোভে আমাকে গ্রাস করেছিল। তখন কি আর এতো ভেবেছিলাম! তখন আমি মেঘের স্রোতে প্রেমের তরী ভাসিয়ে- ছিলাম। একে একে আমিও লিখে চললাম, তার বাহ্যিক সৌন্দর্য। ভিতরে ভিতরে এক ব্যভিচারী বসত করতো জানা ছিলো না। তোমাদের আধুনিকতার কাছে ব্যভিচার শব্দটা অপ্রয়োজনীয় । কিন্তু যাকে তুমি ভালোবাসো সে যে গোপনে গোপনে অবাধ আদিম যৌণ খেলাতে মত্ত্ব জানার পর কি তুমি নীরব থাকতে পারবে? যাকে তুমি দেবীর আসনে বসিয়েছিলে, তার পদ তলে কি আর পূজার ফুল প্রদান করতে পারবে?
হয়তো ভাবছো আমি বিলাপ বকে যাচ্ছি, কিন্তু এটাই ঘটেছে।
তার চাহিদা ছিলো সমাজের ঐসব লোক, যাদের মাধ্যমে সে রাজনৈতিক, আইন বিভিন্ন কাজে নিজের স্বার্থ কে হাছিল করবে।
যে পাপ আমাকে স্পর্শ করেনি কোনদিন, সে পাপে আমাকে ডেকেছিল। রেখে ছিলো পরম আদরের শিমুল তুলার কোমলতাতে। নিজের চাহিদা পূরণ শেষে অবহেলা তে ছুড়ে দিলো। একে একে পনের টা দিন আমার সমগ্র জীবনের ইতিহাস বদলে দিলো। খুব গোপন কিছু কথা আছে, পরে এক সময় লিখবো।
শুনেছি এখন শহরে আছে সে, তাই রাজধানীতে আর যাওয়ার ইচ্ছে নেই। তার এখন অনেক ক্ষমতা, তার অবশ্য না। তার নোংরা শরীরের ক্ষমতা। কোন এক পুলিশ অফিসার তার শয্যা সঙ্গী, যদি ভাই বলে পরিচয় দেয়। আমি তো জানি কে ভাই আর কে নাগর।
যাক সেসব কথা, বড় নোংরা হয়ে যাচ্ছি। আগের মত প্রেম ময় ভাষা আসে না। এখন লিখতে গেলে অশ্লীল ভাষা আসে, তাই লিখালিখি বন্ধ করে দিয়েছি।
আজ আর লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে না, রাত প্রায় শেষ। সে হয়তো আবেগী হয়ে, নগ্ন হয়ে কার ও বাহুডোরে আহ্লাদী কন্ঠে কামনা তে ধ্বংস হচ্ছে। আর আমি!
থাক, আমার কথা নাই বা বলি।
পৃথিবীর বয়স শেষ হয়ে আসছে আর আমার ও।
আমার সকল অভিযোগ বিধাতার কাছে, শেষ বিচারের দিন। আমার নরক বাসে ডেকে নিবো তারে, আমার একমাত্র পাপের দেবী যে। তাকে আমার দাসী করে রাখবো ওই নরকে।
যদি কখনও দেখা পা-ও তারে, চিনে নিও চিবুকের নিচে ছোট্ট তিল দেখে। যে তিলে আমার প্রেম সদা হাসে।
ইতি
নীলয়
No comments:
Post a Comment