Monday, February 15, 2021

কবি

তোমাদের এ তল্লাটে আমি একেবারে নতুন ,
সাজানো গোছানো তোমাদের সবকিছু
আমি চির ছন্নছারা , বড় উদাস ।
নেই কোন গর্ন্তব্য , শুধু পথ চলি
অজানা কে জানার প্রবল ইচ্ছায় ।
আমার শরীরে যে কালো পাঞ্জাবী দেখছো , এটা পাঞ্জাবী না ।
এটা এক দুঃখের করুন ইতিহাস !
সেটা অজানা থাক , দুটি নয়ন 
রক্তে রঞ্জিত দেখছো -
সেটা রাত্রী জাগার অভিশাপ ।
সে চলে যাবার সময় বলেছিল ফিরে আসবে ,
তার প্রতিক্ষায় চেয়ে চেয়ে ক্লান্ত নয়ন
নিদ্রাহীন , যদি ফিরে এসে আমাকে 
নিদ্রায় মত্ত হতে দেখে ফিরে যায় ।
সে ভয়ে আমি জেগে আছি সহস্র বছর ।
সে আসেনি , নয়ন জলে ভেসেছি একাকী ।
আমি কবি না , আমি অতি সাধারন 
অতি তুচ্ছ , তোমাদের এই তল্লাটে
একেবারে নতুন ।
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত , পিপাসীত আমি ।
ভুল করে এসেছি , তোমাদের এই তল্লাটে ।
তোমরা তো সকলে অনন্য , 
বাঁধন হারা , বড্ড গোছালো ছন্দে কবিতার স্রষ্ঠা ।
আমি অগোছালো , কয়য়েকটি শব্দের অমিল ।
উসকো খুসকো চুল দাড়ি , ছিরা জুতা কালো পাঞ্জাবী পুরানো সেই জিন্স ।
ভাব টা এমন যেন , মহাকবি !
তবু ও এ কথা সত্য , আমি তল্লাটে একেবারেই নতুন ।
তোমাদের মত কবিদের ভিরে-
 আমি নিছক এক ভবঘুরে শিশু ।
মেঘনা পাড়ের কন্যা

মেঘনা পাড়ে দেখেছিলাম কন্যা তোমায় , ভরা চাঁদের মাঘী পূর্নিমার প্রথম সে প্রহরে ।
যেখানে এসে "হাড়িদোয়া" শাখা পরম ভালোবাসায় জড়িয়েছে মেঘনাকে ।
আমি চেয়ে দেখছিলাম তোমার সরু কায়া । 
যেন মেঘনার ঢেউ কূলে  আছড়ে পড়ে ।
মন হনন করা চলন তোমার,
"হাড়িদোয়া" এর ন্যায় বেঁকে চলে কোমড় তোমার ।
বড় শখ জেগেছিল মেঘনার পাগল বায়ু হয়ে ছুয়ে দিতে ।
রেশমী চুলে এলোমেলো খেলা করতে ।
নদীর জলে পরা চাঁদের প্রতিবিম্ব কে বড় ই বেরসিক মনে হয়েছিল ।

সে যে র্নিলজ্জ এর ন্যায় তোমার চলার পথে আমার চেয়ে থাকা লোভনীয় দৃষ্টি ,জনসম্মূখে আবরনহীণ করে দিতে অতি ব্যাস্ত ছিল ।
কত সময় ঐ পথ চেয়েছিলাম মনে নাই, হঠাত্‍ এক কম্পিত ঠান্ডা বায়ু আমার অস্তিত্ব জানান দিয়ে গেলো ।

দৃষ্টির অগোচড়ে তুমি তখন মনের মাঝে স্বপ্ন আঁকা অচেনা নারী ।

Sunday, February 7, 2021

উম্মাদ

আমিও গঢ়তে জানি , ভাঙতে জানি।
দাঁত দিয়ে কেটে শিকল, আমি ও মারতে জানি ।
যে দিন আমি উম্মাদ হয়ে যাবো -
 মনে রেখো , সেই দিন তোমার রাজতন্ত্র থরথরিয়ে কাঁপতে থাকবে।
প্রকট শীতে শত বছরের বুড়ী , যেমন থরথরিয়ে কাঁপে ।
প্রচন্ড ভূমিকম্পে যেমন করে-
অট্টলিকা ধসে পরে , তেমন করে তুমিও ।
আর কত ? এইভাবে আঘাত করবে মোরে ।
আমিও তো রক্তে মাংসে গঢ়া মানুষ।
আমার ও ভিতরে রাগ আছে , আছে অভিমান ।
আমি সাধারন , অতি সাধারন ।
তাই বলে কী ? আমার বাহু বল নেই ভাবছো ।
আমি ও জ্বলতে জানি , হিংস্রার অনলে জ্বালাতে জানি ।
যে খেলা আজ তোমরা সূচনা করেছো
আমি তার ইতি টানবোই।
আমি জনগন ,  সাধারন জনগণ
যে দিন আমি ও আমরা উম্মাদ হয়ে যাবো ।
মনে রেখো  জীবিত তোমায় , জলন্ত চিতায় দহন করবো ।
এখন ও সময় আছে , আমার গনতন্ত্র আমাকে ফিরিয়ে দাও ।
বন্ধ করো তোমাদের এই পারিবারিক নৈরাজ্য -
তা না হলে , সত্যিই আমি উম্মাদ হয়ে যাবো ।
তবুও ভালোবাসি

যে দিন তোমার উজ্জল চামড়া ,
কুচকে যাবে , ভাজ পরে যাবে কপালে
সেই দিন , স্বপ্ন হারা এক দুঃখ বিলাসীর কথা মনে হবে তোমার ।
মনের অজান্তে কেঁদে উঠবে তুমি-
ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু বির্সজন দিবে তোমার নয়ন ।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে হয়তো সেইদিন
বলবে তুমি "সত্যিই আমি ভুল করেছি"
সেইদিনের সেই র্দূসময় কেও তোমার পাশে থাকবে না ।
হাত ধরে বলবে না "এই চলো হারিয়ে যায়"
তবুও তুমি হাত বাড়িয়ে দিবে ।
ছানি পরা দু-চোখে ঝাপসা আলোতে
এই আমাকে খুজবে । হয়তো-
সেই দিন এই আমি বিকালের নুয়ে
পরা সূর্যের ন্যায় হেলে যাবো ।
তবুও তোমার ঐ হাত দুটি ধরে-
বলবো সে সময় ভালোবাসি ভালোবাসি ।

Tuesday, February 2, 2021

প্রেমিকাই বারবণিতা

অতঃপর, 
জগৎ এর সমস্ত প্রেমিকাকে একত্র করা হলো।  

       তারপর, 
      একজন কবিকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড় করিয়ে, 
      তার শেষ বক্তব্য বলতে বলা হলো। 

             কবি দিশেহারা হননি। 
গহীন অরণ্যে গাছের ছায়া ভেদ করে যেমন 
সূর্যের তীর্যক রশ্মি  ঝলক  দেয়। 
তেমনি উজ্জ্বল আর প্রাণবন্ত হাসি হেঁসে, 
           তিনি বলতে শুরু করলেন। 

এখানে উপস্থিত সকল প্রেমিকাদ্বয়, 
     তোমরা আমার বড় প্রিয়। 
তোমাদের হাসি আমার কাছে, 
সাগরের বুকে সূর্য উদয়ের মতো। 
তোমাদের একবিন্দু চোখের জল, 
দূর্বা ডগাতে জমে থাকা শিশির বিন্দুর মতো। 

আমি তোমাদের বড় ভালোবাসি 
তাই তো মৃত্যু মঞ্চে,
 তোমাদের কে একটা কথা বলতে আসা। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
খাতা কলম নাও। 

আমার হাতে সময় বড় অল্প,  
তোমাদের দেবার কিছুই নেই আমার 
আমি রিক্ত আমি শূন্য। 
চেয়ে দেখো-
কালো কাপড়ে বেঁধে রাখা হয়েছে আমার চোখ। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
খাতা কলম নাও। 

আমার হাতে সময় বড় অল্প,
আমার কন্ঠনালীতে র‍য়েছে রশি, 
শুনেছি অনেক মূল্য এই রশির। 
কি আশ্চর্য, আমাকে মারতে এতো আয়োজন! 
অথচ আমি প্রেমিক, আমার মৃত্যু নেই 
আমার যন্ত্রণা আছে, কিন্তু নিঃশেষ হবার ভয় নেই
দহন জ্বালা আছে, ভশ্ম হবার ভয় নেই 
কারণ আমি তোমাদের প্রেমিক। 

প্রিয়, প্রেমিকারা 
তোমরা কি জানো 
আমার মৃত্যু দন্ডের কারণ? 

জানার প্রয়োজন নেই 

কারণ বারবণিতাদের 
কোন কিছু জানার প্রয়োজন হয় না।

Monday, February 1, 2021

শপথের চিঠি 
০৪/০৮/২০

প্রিয়,
অপারাজিতা।
শপথের এই চিঠি, 
প্রতীক্ষায় থেকো। 
দেখা হবে বন্ধু,
কথা লও,  শপথ করলাম 
তোমার স্পন্দনের। 
দেখা আমাদের হবেই পূনর্বার। 
ঘূর্ণায়মান এই ধারায়,  
কোন এক সাঝের বেলা।
দেখা যে, আমাদের হতেই হবে,  পূনর্বার।
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বেলে, 
লাল শাড়ী অঙ্গে জড়িয়ে,
হয়তো অন্য কোন পদধ্বনীর, 
প্রহর গুণছো সে সময়।

একটু জল হবে? 
বলে হয়তো দাঁড়িয়ে যাবো, তোমার আঙ্গিনায়!
হবাক হবে? 
নাকি চেনা কন্ঠস্বরে শিউরে উঠবে?
কাপা কাপা কন্ঠে সেইদিন তুমি, 
কি উত্তর দিবে?
জানতে ব্যাকুল হৃদয়। 

আমাদের দেখা হবে সাঁঝের বেলা, 
যেখানে ক্লান্ত সূর্য, অস্তপারের গান করে।
কোন এক পৌষ মাসে,
কুয়াশার চাদড় মুড়িয়ে ,
মধ্য রাতের চাঁদ হয়ে, 
তোমার জানালার গ্রীল ভেদ করে। 
একদিন আমি, 
তোমার প্রেমীকের বুকে আশ্রয় নিবো।
সেই দিন চেনা শরীরের গন্ধে,  
অচেনা আমাকে, দূরে সরিয়ে দিতে পারবে? 
তোমার আদরে মাখা 
হাস্নাহেনা ফুল হয়ে সৌরভ দিবো। 
যতটা নির্দয় হবে তুমি, 
আমি ততোটায় নির্বোধ হবো। 
কোন এক ক্লান্তিময় দুপুরে তোমার আচল তলে,
অবোধ শিশু হবো।
তোমার নষ্ট হয়ে বকে যাওয়া শিশু। 
খুব বিরক্ত করবো। 
সে-দিন কিছুই বলতে পারবে না। 
তোমার শিরা উপশিরা বেয়ে ধাবিত হওয়া,  লহিতকণিকাতে আমি প্রবাহমাণ।

সাঁঝেরবাতি জ্বেলে রেখো,
আমি ফিরে আসবোই, আসবো।
 দেখা আমাদের হবেই পুনর্বার। 
 দেখা আমাদের হতেই হবে, পূনর্বার।
আমাদের ইশ্বর অতটা নির্দয় নয়।