Monday, November 16, 2020

আজ আমার মনটা ঝটফট করেছে । অতীতের কিছু স্মৃতি আমাকে দুমড়ে মুচরে দিচ্ছে । বার বার একটি মুখ আমার চোখের সামনে ভাসতেছে । যখন আমি ছোট ছিলাম  তখন একজন কে অনেক কষ্ট দিয়েছি । হ্যা আমার বাবার কথা বলছি । মধ্যবিত্ত পরিবারে আদরের সন্তান আমি । আমার বাবা সামান্য বেতনের চাকরি করত । আমাদের পরিবার এর সংসার খরচ বড় ভাই ও বোনের পড়াশোনা এবং হাত খরচ সব ই বাবার সামান্য বেতন হতে । ভাবতেও কষ্ট লাগে কী নির্মম অত্যাচার টা না করেছি বাবার উপর । বাবা এটা লাগবে ওটা লাগবে এত টাকা লাগবে । বুক পকেটে হাত দিয়ে একটু মুচকী হেসে এই চরম মিথ্যা বাদী লোকটিক, বলত  আমি তো টাকা অফিসে রেখে এসেছি তোমাকে পরে দিই । এক রাশ হাসি ভরা মুখে বাবাকে জড়িয়ে ধরতাম । রুক্ষ চেহারা যে কত নক্ষত্রের উজ্জল আলো হয়ে জ্বলে উঠতো বলে বোঝাতে পারবো না । আমি জানি আমার বাবা এনে দিবে অফিসে টাকা আছে । কিন্তূ আজ বুঝেছি বাবা সেদিন ঋন করে কিংবা নিজের সংসার এর খরচা থেকে আমাকে খুশি করছে ।যখন কিছু চেয়ে তাত্‍ক্ষনিক না পেয়েছি মায়ের সাথে ঝগড়া করতাম । বাবা এত টাকা কী করে তখন বুঝি না 5000/6000 হাজার টাকা আসলে একটি পরিবার এর জন্য এক সমুদ্র জল এর মাঝে এক ঘটি জল নেওয়া মাত্র । মা মুখটি আড়াল করে দু ফোটা অশ্রু ঝড়িছে কিন্তূ সে অশ্রুর অর্থ বুঝতে দেয়নি । মিথ্যাবাদী বাবা টা একটি ছিড়া জিন্ন পোশাকে মাসের পর মাস কাটিয়েছে  অথচ আমার পোশাকে ধূলা পরলে নতুন আর একটা কিনে দেবার জন্য উতালা হয়ে যেত ।  আমি বড় হলাম চাহিদা বড় হল আমার সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে । বন্ধু আড্ডায় নিজের মান বাচাতে বাবার রক্তে বিনিময়ে উর্পাজিত অর্থ নিদ্বিধায় বিলিয়ে দিলাম । স্বার্থে একটু টানে বাবা কে কত কথা শুনিয়ে দিতাম । বাবা একটু রুক্ষ হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে সব অপমান সয়ে নিত । কোন দিন কটু কথা বলেনি আমায় । মা কিছু বললেও বাবা বলত বড় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে । তখন আমি অনেক বড় । একটি চকলেট এ মন ভরে না বন্ধু অড্ডায় মাঝে মাঝে সিগারেটে সুখটান দিতে শিখছি তখনো আমি নাকি ছোট । আমার বাবা বলছে আমি ছোট নিশ্চয় বাবা কিছু বোঝে না ।এটা ভাবতাম । আমার অপরসীম চাহিদার পৃষ্ট ঘাতে এই লোকটি চাপা পড়ে যেতে লাগলো তার ঐ মিথ্যা গুলো এখন আমার চাহিদার চাবুক ঘাতে রক্ত ঝড়ে ঝড়ে মরে যেতে লাগল । বাবার দেওয়া কথা গুলো বড় তিক্ত লাগল অপমান করতে থাকি তার দেওয়া কথাকে । তবুও এ লোকটি পাষান এর ন্যায় চুপ হাসি বুকে সয়েছে সব ।
আজ আমি বড় হয়েছি নিজে একটা চাকরী করি মোটামুটি ভাল বেতন পায় তবুও নিজের উপাজিত অর্থে যদি বাবার দেওয়া অর্থ যোগ না হয় তবে অপূর্ন থেকে যায় । কিছু না পাবার কষ্ট থেকে যায় । বাবার কাছ থেকে এখন ও 100/200 টাকা নিয়ে একটা তৃপ্তি পাই । বাবার মুখে এখন ও সেই হাসি আমাকে মুগ্ধ করে । সত্যি বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসি এখন দূর থেকে তা প্রতি সেকেন্ডে অনুভাব করছি । অশ্রু ঝড়ছে তোমাকে ভেবে । বার বার একটা কথা মনে হয় আসলে তুমি মিথ্যাবাদী চরম নিজে কষ্ট করে আমাকে সুখী করেছো ভাবি কি করে একটা মানুষ নিজেকে নিঃশ্বেস করে ও এতটা ভালো হয় বুঝিনা ।

Tuesday, November 3, 2020

সে আসে, অশ্রু ঝড়ায় 
কে'নো ? মলিন চোখে 
কাজল ল্যাপ্টে থাকে 
নিদ্রাহীনতার! তবে  
প্রকৃতি কথা বলে?
ফিরিয়ে দেয়? 
সময়ের খাজনা। 
তবে কেন বা আসে। 
নিষিদ্ধ ধোঁয়াতে 
মিশে যায় চোখের ধাঁধাতে
পূর্ণ বাসনার শশী বাতিতে
মিশে যায়, শিরা ও উপশিরাতে। 
সুখ, দুঃখ 
ক্রোধ ও বিরহে। 
মিশে যায়; যেভাবে 
নীল মিশে যায়, 
আকাশে। 
ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে 
প্রতিছাঁয়া হয়ে 
রৌদ, বৃষ্টি কিংবা ঝড়ে। 
আলো দেখলে, ছুটে আসে 
অন্ধকার প্রতিচ্ছবি হয়ে। 
রাত এলে মিশে যায় অন্ধকারে, 
নিজের ছাঁয়া যেভাবে হারিয়ে যায় 
সূর্য ঘুমে ঢ'লে পড়লে। 
তবুও আসে নিশিতে 
দুরারোগ্য ক্যান্সের মতো
থেকে যায়, চাহেনা মোরে ছাড়িতে। 

দুঃস্বপ্ন
সে আসে, অশ্রু ঝড়ায় 
কে'নো ? মলিন চোখে 
কাজল ল্যাপ্টে থাকে 
নিদ্রাহীনতার! তবে  
প্রকৃতি কথা বলে?
ফিরিয়ে দেয়? 
সময়ের খাজনা। 
তবে কেন বা আসে। 
নিষিদ্ধ ধোঁয়াতে 
মিশে যায় চোখের ধাঁধাতে
পূর্ণ বাসনার শশী বাতিতে
মিশে যায়, শিরা ও উপশিরাতে। 
সুখ, দুঃখ 
ক্রোধ ও বিরহে। 
মিশে যায়; যেভাবে 
নীল মিশে যায়, 
আকাশে। 
ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকে 
প্রতিছাঁয়া হয়ে 
রৌদ, বৃষ্টি কিংবা ঝড়ে। 
আলো দেখলে, ছুটে আসে 
অন্ধকার প্রতিচ্ছবি হয়ে। 
রাত এলে মিশে যায় অন্ধকারে, 
নিজের ছাঁয়া যেভাবে হারিয়ে যায় 
সূর্য ঘুমে ঢ'লে পড়লে। 
তবুও আসে নিশিতে 
দুরারোগ্য ক্যান্সের মতো
থেকে যায়, চাহেনা মোরে ছাড়িতে। 

দুঃস্বপ্ন
নারী সম্পর্কে বিদ্রোহী'র মত এতো সুন্দর উদাহরণ কোন নারীবাদী কখনো দিতে পেরেছে কিনা জানতে ইচ্ছে হয়।  

( কুহেলিকা -একের কিছু অংশ) 

নারী শুধু ইঙ্গিত, সে প্রকাশ নয়। নারীকে আমরা দেখি, বেলাভূমে দাঁড়িয়ে – মহাসিন্ধু দেখার মতো। তীরে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের যতটুকু দেখা যায়, আমরা নারীকে দেখি ততটুকু। সমুদ্রের জলে আমরা যতটুকু নামতে পারি, নারীর মাঝেও ডুবি ততটুকুই।... সে সর্বদা রহস্যের পর রহস্য-জাল দিয়ে নিজেকে গোপন করছে – এই তার স্বভাব।.কী গভীর রহস্য ওদের চোখে-মুখে। ওরা চাঁদের মতো মায়াবী; তারার মতো সুদূর। ছায়াপথের মতো রহস্য।... শুধু আবছায়া, শুধু গোপন! ওরা যেন পৃথিবী হতে কোটি কোটি মাইল দূরে। গ্রহলোক ওদের চোখে চেয়ে আছে অবাক হয়ে – খুকি যেমন করে সন্ধ্যাতারা দেখে। ওদের হয়তো শুধু দেখা যায়, ধরা যায় না। রাখা যায়, ছোঁয়া যায় না। ওরা যেন চাঁদের শোভা, চোখের জলের বাদলা-রাতে চারপাশের বিষাদ-ঘন মেঘে ইন্দ্রধনুর বৃত্ত রচনা করে। দু-দণ্ডের তরে, তারপর মিলিয়ে যায়। ওরা যেন জলের ঢেউ, ফুলের গন্ধ, পাতার শ্যামলিমা। ওদের অনুভব করো, দেখো, কিন্তু ধরতে যেয়ো না।’ঢেউ ধরতে গেলেই জলে ডুববে। গন্ধ ধরতে গেলেই বিঁধবে কাঁটা। শ্যামলিমা ধরতে গেলেই বাজবে শাখা। নারী দেবী, ওকে ছুঁতে নেই, পায়ের নীচে গড় করতে হয়।... কিন্তু কবি, নারী নায়িকা। ও ছাড়া নারীর আর কোনো সংজ্ঞাই নেই।’আমি জানি, নারী মাত্রই নায়িকা। ওরা প্রত্যেকে প্রতিদিন গল্প আর উপন্যাস সৃজন করে চলেছে।... তবে বড্ড বজ্র আঁটুনি – অবশ্য গেরো ফস্কা। কত “চোখের বালি” কত “ঘরে বাইরে”, কত “গৃহদাহ”, “চরিত্রহীন” সৃষ্টি করছে নারী, তার কটাই বা তোমাদের চোখে পড়ে কবি।... যে কোনো মেয়েকে দুটো দিন ভালো করে দেখো, দেখবে লক্ষ্মী-পক্ষী ইত্যাদি চতুর পুরুষের দেওয়া যত সব বিশেষণ কোনোটাই তাকে মানায় না। তবে, নারী বেচারি সংস্কার আর সমাজের খাতিরে সে যা নয় – তাই হবার জন্যে আমরণ সাধনা করছে। সে যুগ যুগ ধরে চতুর পুরুষের ছাঁচে নিজেকে ঢেলে পুরুষকে খুশি করছে। পুরুষ কিন্তু দিব্যি গায়ে ফুঁ দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে এবং নারীকে শিখাচ্ছে দাঁড় ও ছোলা কলার মহিমা। সমানে সমানে বোঝাপড়া হলে নারীকে দেখতে শুধু নায়িকা রূপেই। তোমরা নারীকে দেখ, সে যা হলে ভালো হয় – তাই করে আর আমাদের মতো নিরেট মানুষে দেখে, নারীকে সে যা আছে – তার এক চুলও অতিক্রম না করে। তোমরা যারা নারীকে পূজা কর, আমার এ নির্মমতায় হয়তো ব্যথা পাবে, কিন্তু আমি নারীকে পূজা না করলেও অশ্রদ্ধা করিনে এবং শ্রদ্ধা হয়তো তোমাদের চেয়ে বেশিই করি। কিন্তু তাকে অতিরিক্ত অলংকার পরিয়ে সুন্দর করে – সিঁদুর-কঙ্কণ পরিয়ে কল্যাণী করে নয়। আমি সহজ নারীকে, নিরাভরণাকে করি বন্দনা। রাংতার সাজ পরিয়ে নারীকে দেবী করবার সাধনা আমার নয়। তিন হাত নারীকে বারো হাত শাড়ি পরিয়ে বিপুল করে বাইশ সের লুৎফুন্নিসাকে হিরা জহরত সোনাদানা পরিয়ে এক মনি ভারাক্রান্ত করে – নারীকে প্রসংসা করার চাতুরি আমার নয়! তোমরা হয়তো চটবে, কিন্তু আমি বলি কী, জান? আমি চাই রূপের মোমতাজকে। তাজমহল দিয়ে মোমতাজকে আড়াল করার অবমাননা আমাকে পীড়া দেয়। আমার ক্ষমতা যদি থাকত, ওই বন্দনাগার হতে মোমতাজকে আমি মুক্তি দিতাম। কবরের ভিতর যদি শান্তি থাকে, তবে ‘জাহানারা’ ‘মোমতাজ’ বেচারির চেয়ে অনেক শান্তিতে আছে। জাহানারার কবরের শষ্প-আচ্ছাদনকে মানুষের অহংকার দলিত করেনি, কোনো পাষাণ-দেউল তার বুকে বসে তার বাইরের আকাশ আলোকে আড়াল করে দাঁড়ায়নি!..."
১৮'ই আশ্বিন ১৪২৬
০২'ই নভেম্বর ২০১৯
অ'প্রিয়, 

মনের মাঝে গেঁথে থাকা ধুতরা ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহণ করো।  গোলাপের শুভেচ্ছা প্রেরণ করে,  গোলাপের পবিত্রতা হরনের দায় ভার গ্রহণ করতে পারবো না বিধায়, সে শুভেচ্ছা হতে তুমি বঞ্চিত।  যদিও জানি অনেকে তোমার বাহ্যিক রূপের মোহে তোমাকে কত উপমা'তে সাজাতে চাই!  তারা যদি সত্যিকার তুমি কে জানতো, তবে হয়তো। 
 থাক সে সব কথা,  আজ কয়দিন হলো বৃষ্টি হচ্ছে।  অথচ শরৎ কালে এই ভাবে বৃষ্টি হবার কথা ছিলো না।  শরৎ ' র চোখের জলে নিজেকে ভিজিয়ে তোমাকে লিখতে বসা।  অভিযোগের ডায়েরি থেকে। 

শরৎ'র আকাশ'টা এখন ঘন ঘন কাঁদতে বসে,  খুব যত্ন করে, সুর করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে।  বায়না ধরে, না পাওয়ার যন্তনা নিয়ে, যেভাবে আমার ছোট্ট মেয়েটি কাঁদে দীর্ঘ সময় অব্ধি। 
   অথচ শ্রাবণের আকাশের,  এই ভাবে কাঁদার কোন প্রশ্নই আসে না! 
প্রকৃতি পরম মমতায় শরৎ কে উজাড় করে সৌন্দর্য দিয়েছে। 
 " দু-চালা কুঁড়ে ঘর দেখেছো কখনো"?
একবার আমাদের গ্রামের থেকে বেশ দূরে এক গ্রামে,  মায়ের নিকট বর্তী এক আত্মীয় ' র মৃত্যু লাশ দেখতে গেছিলাম। লাশ বলতে মনে পড়ে গেলো স্বজন হারা "মানুষের আর্তনাদ "।  আমি মানুষের আর্তনাদকে সহ্য করতে পারি না, বুকের মাঝে পাথর সম ব্যথা অনুভূতি হয়।  তাই মৃত্য মানুষের লাশ দেখতে যাই না। তো' সে দিন মা' খালাদের স্বজনহারা আর্তনাদ আমি সহ্য না করতে পেরে, ছুটতে ছুটতে বহু দূর চলে গেছিলাম।  চোখের সামনে এক দু-চালা মাটি ও খড়ের বাড়ি দেখলাম।  অন্য কোন একদিন সে বাড়ি নিয়ে লিখবো।  আজ আর সেদিকে না যাই, শুধু সেদিনের সে রূপ প্রকাশ করতে হলে আমার আজ রাত শেষ হবে।  এতো টুকু'ই বলবো,  গ্রামের এক জন কৃষকের বাড়ি ফুল গাছের বাগান আর নৈপূনতার যেমন কোন কমতি থাকে না।  যতটা সুন্দর তোমাদের শহরের মানুষের কল্পনাতীত ততটা সুন্দর করে,  প্রকৃতি প্রলেপ লেপ্টে দেয় শরৎ এর রূপে। 
   তবু ও দেখো স্বজন হারা হয়ে আর্তনাদে দুক'ড়ে দুক'ড়ে কাঁদছে।  কি'যে তার শূন্য,  কি'তার বিষন্নতা  কেউ জানতে'ও চাই না।  সকলে শরৎ এর রূপ দেখে,  কাশফুলের ছোঁয়া পেতে উম্মূখ হয়ে ওঠে। 

  অথচ,  শরৎ এর আকাশ কে কেউ কোন দিন প্রশ্ন করে না,  কি ব্যথার বেদনে সে বিভোর?  

আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়,  আমার মত'ই আকাশের কোন প্রতারক তুমি ছিলো কি'না?  

    যাই হোক তুমি কেমন আছো? নিজের স্বার্থের জন্য যে সব উজাড় করে বিলিয়ে দিতে জানে,  তার তো আর খারাপ থাকার প্রশ্ন' ই আসে না।  তুমি নিশ্চয় ভালো আছো? 
কি ভাবছো?  তুমি ভালো থাকো এটাই আমি চাই! 
প্রশ্ন'ই আসে না!  আমি অত'টা উদার নাই।  
যে আমাকের গ্রীষ্মের দাবানলে দহন করবে,  তার আকাশে বর্ষার মেঘ হয়ে বর্ষিত হব!  বরং চৈত্রের কঠিন রবিরাজের অগ্নিপথে বাতাস হয়ে প্রবেশ করবো।  যেমন টা কামাড় লোহা কে কয়লা'র উপর রেখে অক্সিজেনের অবাদ প্রবেশের জন্য আগুনকে জ্বালতে সারাদিন শ্রম দেয়। 
আজ অনেক অভিমান অভিযোগ মনের অভ্যন্তরে ধাক্কা দিচ্ছে,  কলমে আর কাগজে অশ্রু হয়ে জমা হচ্ছে।  গত চারটি বছর কখনো ভুল হয়'নি, কিংবা শত প্রচেষ্টা করে ও তুমি আটকে রাখতে পাড়নি আমাকে সর্ব প্রথম অভিনন্দন জানতে তোমার জম্মদিনের।  
  অথচ এই প্রথম তোমার জম্মদিন আসছে, (আগামী কার্তিকে)  অথচ আমার কোন পরিকল্পনা নেই।  
অবশ্য তুমি আমার কোন কিছু'তে নেই।  আছো অভিযোগ আর অভিশাপের খাতাতে।  তোমার প্রতি আমার অভিযোগ গুলো মিথ্যা ছিলো না কখনো,  নিজেকে পরিবর্তের চেয়ে নিজেকে বিলিয়ে দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছো।  এখনো তাই করছো৷  
তোমাকে লিখতে চাইলে যেনো লিখে যেতেই ইচ্ছে হয়।  যদি ' ও জানি তুমিবকোন দিন পড়বে না।  আর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কখনো কোন ভাজ হয়ে থাকা পৃষ্ঠা 'ই পেয়ে যাও।  নাম পরিচয় হীন চিঠি,  তবে সে'দিন ও তোমার বুঝতে  ভুল হবে না এই চিঠি র মালিক যে তুমি'ই,  এক কথা মনে করতে।  
 কারন বিশ্বের একমাত্র আমি' ই যে কিনা, তার প্রিয় মানুষের আঁখি পাতে শরৎ'র আকাশের ন্যায় অবিরাম জলধারা বয়ে যেতে দেখতে চাই।  আমি জানি সেদিন এই চিঠি পড়ে তুমি বিরক্ত বোধ করবে।  তার চেয়ে বেশি বিরক্ত বোধ করবে ' জ্যোৎস্নার আড়ালে যে বিষ ধারণ করে চাঁদ' শিরোনামের গল্প পড়লে।  তোমার চরিত্র গুলো বাস্তব তুমির সাথে মিলিয়ে পাঠক সমাজে যতটুকু নোংরামি প্রকাশ সম্ভাব ততটুকু প্রকাশ করবো।  হয়তো সম্পূর্ণ তোমাকে প্রকাশ করলে পাঠক সমাজে আমাকে চটি লিখক নামে আখ্যায়িত করা হতে পারে।  কিংবা অশ্লীল বই লিখার অপরাধে জেল জরিমানা হতে পারে।  সে ভয়ে তোমাকে প্রকাশ করতে পারেনি।  যদি প্রকাশ করা সম্ভাব হতো, তবে তোমাকে জম্ম দেওয়ার অপরাধ বোধে এই পৃথিবী, অন্য কোন গ্রহের সাথে স্বংঘর্ষিত হয়ে ধ্বংস  হবার চেষ্টা করতো। নিজের সম্পর্কে এতো নষ্ট সত্য কেউ সহ্য করতে পারবে না কোন দিন।  এমন 'কি তুমিও না। 
যতই লিখবো না ভাবতেছি তত'ই,  তোমাকে নিজের মাঝে আবিষ্কার করছি।  তাই ইচ্ছের বুকে মাটি চাপা দিয়ে শেষ করছি। 

 ভালো থাকার প্রর্থনা তোমাকে অনেকে করে, আমি করবো না। তুমি বরং কয়লা'র অগ্নিতাপে লোহা'র মত অগ্নিদগ্ধ হ'ও প্রতিনিয়ত। 

                                             ইতি
                                   তোমার অভিশাপ
পূণ্যের খাতা শূন্য মোর
০৩/১১/২০১৪

নেশার আলোতে নেশা গ্রস্থ সকলে 
দু'ই একজন বড্ড বে-লাইনের ।
ওরা নেশা করে না , কারন ওরা খারাপ !
এখানে আজ কড়জোরে দু হাত-
একত্র ,বসে আছে দেবতা সব ।
অসূরেরা করছে শাসন, স্বর্গলোক ।
শকুনের আর্তনাদ এখানে বড় সুমধুর 
কোকিলের গান হয়ে উঠেছে তিক্ত। 
সুরে সুরেলা মেয়েরা এখানে বড় নিকৃষ্ট ।
মাঝ রাতের নিষিদ্ধ নারীর শীৎকার এখানে ,
বড়ই আকৃষ্ট ।
ভূমিষ্ট হয়েছে যে শিশুটি, একটু আগে
সে ও জানে 
এখানে জম্ম নিতে হলে কর দিতে হয় । 
কারন , দেবতা 
এখানে অসূরের দাস । 
চোখের জলের মূল্য ,
 দিতে জানে না কেউ ।
অর্থ লোভ লালসা ঘিরে আছে এখানে ।
গরীবের বুকে পারা দিয়ে , 
ধনীরা হয় সমাজ শ্রেষ্ট ।
পথ ভুলে চলে এসেছি প্রভু 
অচিন পথে 
ক্ষম করো তুমি, মোরে । 
কি দেখার কথা ছিল ? 
আজ কি দেখি !
সৃষ্টি নজর দারী করতে চায় স্রষ্টার। 
আমাকে আলোর পথে অভিসারী কর তুমি । 
তব নহে মরনের বার্তা দাও প্রেরন করে ।
এই পাপিষ্ঠ শহরে ,আমি ও যে -
নষ্ট হয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে । 
শেষ বিচারের হিসাবের খাতা শূন্য
মোর , পূর্ন হবে কি করে পূণ্যতে ।
এই পাপিষ্ঠ নগরীতে ,
মানুষ -সেজে দেবতা । 
তোমাকে করিতে চায় শাসন !
এক আত্মার অলিখিত কথা। 

সূর্য অজানাতে ডুব দেওয়ার পর। যেমন, প্রকৃতি রক্তিম মেঘে নিজেকে আলোকিত করতে চেয়ে ব্যার্থ  হয়।  রাতের অন্ধকারের চাদরে ঢেকে যায়। তেমনি আমার চারিপাশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।  পায়ের নিচ হতে ক্রমশ, যন্ত্রণা টা খুব ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠছে।  ঝাপসা হয়ে উঠচ্ছে আমার চারপাশ,  কান্না আর প্রার্থনা ভেসে আসছে। আতর  সুগন্ধি র তীব্র ঘ্রাণ, অথচ এক সময় এতো তীব্র সুগন্ধি ব্যবহার করে, আমার পাশে আসতো না।  শরীর টা খুব ব্যথা,  কেউ ছুঁয়ে দিলে চিৎকার করতে ইচ্ছে হচ্ছে।  বয়স হয়েছে  লোক লজ্জার ভয়ে চিৎকার করতে পারছি না।  
  ভীষণ পিপাসা পেয়েছে,  কলিজা 'টা যেন শত শত বছর জলের সংস্পর্শে আসে নি।  সবাই ব্যস্ত!  আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে সাহায্য করার মত কেউ এখানে নেই।  অথচ এরা'ই নাকি আমার আপন!  
 কি ভয়ংকর এক স্বপ্ন দেখলাম মাত্র,  চোখের সামনে থেকে কোন মতে দৃশ্য টা দূরে সরে যাচ্ছে না। 

 হঠাৎ বাড়িতে এতো মানুষের আনাগোনা, সবার মুখে আমার নাম।  এক টু অবাক হলাম, এরা কি পাগল হয়ে গেছে?  হাসি পাচ্ছিল, তাদের কর্মকান্ড দেখে৷ 
 কিন্তু শত চেষ্টা করেও হাসতে পারেনি,  খুব ব্যথা শরীরে।  প্রতিটি শিরা উপশিরাতে। একটু উষ্ণ পানিতে গোসল দিতে পারলে,  হয়তো ভালো লাগতো।  এ 'কি এ যে মেঘ না চাইতে বৃষ্টি!  
 কয়য়েক জন কে দেখলাম উষ্ণ পানি নিয়ে আসছে এই দিকে।  
 আমি ক্লান্ত জেনে হয়তো। অবাক হলাম তখন।  যখন, আমার শরীরে মানুষ গুলো উষ্ণ পানি ঢেলেছে।  অথচ আমার ক্লান্তি দূর হচ্ছে না।  আমার ক্লান্তি যেনো বেড়েই চলেছে।  আর মানুষ গুলো খুব যত্ন করে যখন আমার শরীরে হাত দিচ্ছে। যেন পাখির পালকের ছোঁয়া, তবুও তীব্র ব্যথায় কাতর হয়ে আমি চিৎকার করছি। কেউ যেন কর্ণপাত করছে না।  আতর আর কপূরে ছেয়ে গেছে আমার আদরে বেড়ে ওঠা শরীর।  এর পর আমি আর ও বিমোহিত যখন দেখি আমার প্রিয় জনেরা আমাকে কাঁধে করে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছে।  আমার প্রিয় ঘর বাড়ি তিল তিল করে জমিয়ে রাখা স্মৃতি!  আমার ঘরে আমার প্রবেশ নিষেধ করা হচ্ছে।  
 অন্ধকার মাটির নিচে আমার দেহ কে রেখে সকলে চলে যাচ্ছে,  অথচ একদিন ও বাড়ির বাহিরে রাত বেশি হলে এরা চিন্তিত হতো।  আজ অনায়াসে রেখে চলে যাচ্ছে মানুষ গুলো।  আমি কি করে যাই, আমার শরীর রেখে? যে শরীরে বাসা বেধে কাটিয়েছি এতো গুলো বছর।  সে শরীর রেখে চলে যাবো কি করে।  আমি র'য়ে যাই অন্ধকার কবরে।  আলো উঠলে ফিরে যাবো। 
 আলো তো আর উঠলো না!  সূর্য এর দেখাও মিলল না।  আজ অনেক দিন হয়ে গেছে কেউ দেখতে এলোনা। 
 এখন আর শরীরের মায়া নেই,  মাটিতে বিলিন হয়ে গেছে।  অন্ধকারে যত্ন করার সময় হয়নি।  ছোট্ট জীবনের ভুল ভ্রান্তি হিসাবে খুব ব্যস্ত ছিলাম।  ইশ্বর দূত প্রেরণ করেছে।  এক দিনের ছুটি মিলেছে।  তাই নিজের ঘর বাড়ি আর প্রিয় জন দের দেখতে এসেছি।  সবাই দেখলাম দিব্যি আছে,  আমি নেই আমার ঘরটা আজ অন্যের দখলে।  বেশ পরিপাটি।   অথচ এলো মেলো আর অগোছালো থাকতো,  এই ঘরটি এক সময়।  দরজা টা দেখি তালা দেওয়া।  চাবি টা যে কোথায় রেখেছি?  ফিরে যাচ্ছি,  চাবি খুজতে।  সবার সাথে দেখা করলাম কুশল জানতে চেয়ে প্রতি উত্তর মিলল না।  কেউ আমার কথার জবাব দিলো না।  সম্ভাবত আমার মুখচ্ছবি ভুলে গেছে সবাই।  
 এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কথা। 
ওই দিকে বাঁশি তে ফুঁ দিচ্ছে দূত।  ফিরে যেতে হবে সেই অন্ধকার নিবাসে।  
 সে দিন যাকে খারাপ স্বপ্ন ভেবেছিলাম, সে তো স্বপ্ন ছিলো না।  ছিলো আলোকিত পৃথিবী হতে শেষ যাত্রা।
ফিরে যেতে আসা 
০৩/১১/১৫

আমাকে আর কি ধ্বংস করবে তুমি? 
 মহাকালের ডাকে
সে কবে নিজেকে বিসর্জন করেছি। 
আমাকে আর কিসের দহণে ভৎস করবে? 
আমি তো সেই কবে প্রেমের চিতা জেলে,
 সে অনলে ভৎস হয়েছি । 
 আমার নয়ন জলে পদ্মার বুকে কাঁপন ওঠে
 যমুনার অশান্ত ঢেউয়ের আঘাত 
 চপঘাত সৃষ্টি করে, কাঁদবে?  
 কি করে ?
 মরুর বুকে প্রবাহমান সাইমুন লন্ডভন্ড করে ;
এই বুকে এসে প্রশান্তির ছায়াতলে নতজানু হয়।
কিসের ভয় দেখাবে তুমি ?
হারাতে হারাতে কবে নিজেকে, হারিয়ে ফেলেছি -
 এখন কোন কিছু হারানোর ভয়ে 
 বীভৎস স্বপ্ন দেখে,
 জেগে উঠি না ।
 এমন কি প্রিয় হারানোর ভয় 
 আমাকে ঘিরে ধরে না ।
 আমি জানি -
যে কাছে আসে , সে ফিরে যেতেই আসে ।