Monday, November 16, 2020

আজ আমার মনটা ঝটফট করেছে । অতীতের কিছু স্মৃতি আমাকে দুমড়ে মুচরে দিচ্ছে । বার বার একটি মুখ আমার চোখের সামনে ভাসতেছে । যখন আমি ছোট ছিলাম  তখন একজন কে অনেক কষ্ট দিয়েছি । হ্যা আমার বাবার কথা বলছি । মধ্যবিত্ত পরিবারে আদরের সন্তান আমি । আমার বাবা সামান্য বেতনের চাকরি করত । আমাদের পরিবার এর সংসার খরচ বড় ভাই ও বোনের পড়াশোনা এবং হাত খরচ সব ই বাবার সামান্য বেতন হতে । ভাবতেও কষ্ট লাগে কী নির্মম অত্যাচার টা না করেছি বাবার উপর । বাবা এটা লাগবে ওটা লাগবে এত টাকা লাগবে । বুক পকেটে হাত দিয়ে একটু মুচকী হেসে এই চরম মিথ্যা বাদী লোকটিক, বলত  আমি তো টাকা অফিসে রেখে এসেছি তোমাকে পরে দিই । এক রাশ হাসি ভরা মুখে বাবাকে জড়িয়ে ধরতাম । রুক্ষ চেহারা যে কত নক্ষত্রের উজ্জল আলো হয়ে জ্বলে উঠতো বলে বোঝাতে পারবো না । আমি জানি আমার বাবা এনে দিবে অফিসে টাকা আছে । কিন্তূ আজ বুঝেছি বাবা সেদিন ঋন করে কিংবা নিজের সংসার এর খরচা থেকে আমাকে খুশি করছে ।যখন কিছু চেয়ে তাত্‍ক্ষনিক না পেয়েছি মায়ের সাথে ঝগড়া করতাম । বাবা এত টাকা কী করে তখন বুঝি না 5000/6000 হাজার টাকা আসলে একটি পরিবার এর জন্য এক সমুদ্র জল এর মাঝে এক ঘটি জল নেওয়া মাত্র । মা মুখটি আড়াল করে দু ফোটা অশ্রু ঝড়িছে কিন্তূ সে অশ্রুর অর্থ বুঝতে দেয়নি । মিথ্যাবাদী বাবা টা একটি ছিড়া জিন্ন পোশাকে মাসের পর মাস কাটিয়েছে  অথচ আমার পোশাকে ধূলা পরলে নতুন আর একটা কিনে দেবার জন্য উতালা হয়ে যেত ।  আমি বড় হলাম চাহিদা বড় হল আমার সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে । বন্ধু আড্ডায় নিজের মান বাচাতে বাবার রক্তে বিনিময়ে উর্পাজিত অর্থ নিদ্বিধায় বিলিয়ে দিলাম । স্বার্থে একটু টানে বাবা কে কত কথা শুনিয়ে দিতাম । বাবা একটু রুক্ষ হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে সব অপমান সয়ে নিত । কোন দিন কটু কথা বলেনি আমায় । মা কিছু বললেও বাবা বলত বড় হলে সব ঠিক হয়ে যাবে । তখন আমি অনেক বড় । একটি চকলেট এ মন ভরে না বন্ধু অড্ডায় মাঝে মাঝে সিগারেটে সুখটান দিতে শিখছি তখনো আমি নাকি ছোট । আমার বাবা বলছে আমি ছোট নিশ্চয় বাবা কিছু বোঝে না ।এটা ভাবতাম । আমার অপরসীম চাহিদার পৃষ্ট ঘাতে এই লোকটি চাপা পড়ে যেতে লাগলো তার ঐ মিথ্যা গুলো এখন আমার চাহিদার চাবুক ঘাতে রক্ত ঝড়ে ঝড়ে মরে যেতে লাগল । বাবার দেওয়া কথা গুলো বড় তিক্ত লাগল অপমান করতে থাকি তার দেওয়া কথাকে । তবুও এ লোকটি পাষান এর ন্যায় চুপ হাসি বুকে সয়েছে সব ।
আজ আমি বড় হয়েছি নিজে একটা চাকরী করি মোটামুটি ভাল বেতন পায় তবুও নিজের উপাজিত অর্থে যদি বাবার দেওয়া অর্থ যোগ না হয় তবে অপূর্ন থেকে যায় । কিছু না পাবার কষ্ট থেকে যায় । বাবার কাছ থেকে এখন ও 100/200 টাকা নিয়ে একটা তৃপ্তি পাই । বাবার মুখে এখন ও সেই হাসি আমাকে মুগ্ধ করে । সত্যি বাবা তোমাকে অনেক ভালোবাসি এখন দূর থেকে তা প্রতি সেকেন্ডে অনুভাব করছি । অশ্রু ঝড়ছে তোমাকে ভেবে । বার বার একটা কথা মনে হয় আসলে তুমি মিথ্যাবাদী চরম নিজে কষ্ট করে আমাকে সুখী করেছো ভাবি কি করে একটা মানুষ নিজেকে নিঃশ্বেস করে ও এতটা ভালো হয় বুঝিনা ।

No comments:

Post a Comment