Thursday, November 28, 2019

আমার আমাকে যদি জানতে চাও

" আমি কেনো ভিন্ন! 
 তোমাদের চিরচেনা সমাজের কাছে?  "





ঘটনা 'এক' 

বকুল ফুলের মালা হাতে ১২ বছরে এক বালক ছুটছে।
  মালা নিবেন, ভাইয়া মালা নেন একটা, আপু মালা নেন একটা। 

  পকেটে হাত দিয়ে দেখি আড্ডা শেষে দশ টাকা অবশিষ্ট। কিন্তু ফুলের মালা আমাকে নিতেই হবে।  
কখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব হয় না,  যে সকালে কর্মস্থানে ফিরতে এই টাকা আমার লাগবে।  ওই সময় ওই বালক টির হাসি আমাকে ভুলিয়ে দেয়, আমার আগামীদিনের চিন্তা। ওর চোখে দেখি বিশ্বাস! 
ও বিশ্বাস করে  সৃষ্টি কর্তা ওই ফুলের মাঝে তার রিযিক লিখেছেন। আমি এই বিশ্বাসকে সম্মান করি, উপভোগ করি। 
দশ টাকার যে কয়টা মালা হয় কিনে নিই।  চাইলে দশ টাকা ওকে এমনি দিয়ে দিতে পারতাম।  কিন্তু দেইনি! 
  কারন ও যেন ওর কর্মের সম্মানের মূল্য পাই। ওর বিশ্বাস যেন নষ্ট না হয়। যে ফুলের মালার মাঝে,  রিযিক দাতা ওর রিযিক রেখেছেন। তাকে দশ টাকা এমনিতে দিয়ে, তার বিশ্বাস ভঙ্গের কারন হতে চাইনি।  আমি ওর চোখে সৃষ্টিকর্তার প্রতি যে বিশ্বাস দেখেছি,  যে পূর্নতা দেখেছি। তাতে করে  আমার  আর এক জনমে ফুল বিক্রেতা হয়ে জম্ম নিতে ইচ্ছে  হয়। 

ঘটনা' দুই'
 
আজ যখন আজমীর শরিফের ফিতা দেখলাম,( লালুশালু) হলুদ লাল ফিতা,  এক সাধু নিয়ে বসে আছে।  আমি যেয়ে জানতে চাইলাম, দাম কত? 
সাধুঃ আপনার যা ইচ্ছে হয় 
আমি কথা বলে হাত এগিয়ে দিই।  যদিও আমার এই লালুশালু ফিতাতে বিশ্বাস নেই।  এবং বিশ্বাস নেই ওই ব্যাক্তির (সাধু) বিশ্বাসের  প্রতি বিশ্বাস।  আমার বিশ্বাস আছে ওর মুখের হাসির প্রতি।  ও হয়তো বিশ্বাস করেই নিয়েছে,  পীরের অছিলতে আল্লাহ তার রিযিকের ব্যবস্থা করেছে।  এই বিশ্বাস নিয়ে সে যে পরম তৃপ্তি নিয়ে হাসে। সে হাসির বর্ণনা হয়তো রবি ঠাকুর,  কিংবা শরৎবাবু দিতে পারবেন। আমি অতি নগণ্য এবং আদিম   { সভ্যতার পরিবর্তনের হাওয়া গায়ে মেখে চলে  আর  শেষ হয়ে গেলো সব শেষ হয়ে গেলো বলে চিৎকার করতে থাকা গুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসে  । }
{[(   ওই দিকে সংস্কৃতি নামের অপসংস্কৃতি আমাদের বাঙালি শিকড় কে উবু করে *** দিয়ে যাচ্ছে   )]}
এই দিকে আমি চেয়ে থাকি ওই সাধুর চোখের দিকে।  মানুষের ভিতর কে জানতে হলে সরাসরি তার চোখের দিকে তাকান।  সে সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে?  মানুষের চোখ মিথ্যা বলেনা।  আমি তার বিশ্বাসকে সম্মান করি এবং উপভোগ করি।  তাই আমি সাধুদের কাছ থেকে ফিতা কিংবা বালা নিয়ে হাতে পড়ি। এতে আধুনিক সভ্যতার মানুষ কি  মনোভাব প্রকাশ করে তাতে আমার কোন মাথাব্যথা নেই।  

এ ধরণের অসংখ্য বিশ্বাসের ঘটনা, যা আমি উপভোগ করি।  
অথচ,
তোমরা হয় সে নিয়ম মেনে নাও, আর না হয় উপেক্ষা করো।  

কিন্তু,আমি
 আমার মতো ছুটে চলি। যারা এই সমাজের হাতে জিম্মি না, কিংবা সমাজের নিয়মের নির্মম চাবুকের আঘাতে পৃষ্ট তাদের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি উপভোগ করি।  কখনো কখনো শয়াতানের হাত ধরে নরকে আবার কখনো কখনো ইশ্বরের প্রেরিত দূতের হাত ধরে স্বর্গে করি বিচরণ।  তবে আমি না ইশ্বরের নামে মিথ্যা বলি, আর না আমি শয়তান কে লেলিয়ে দিই মানুষের প্রতি।  আমি আমার মতো মানুষের বিশ্বাস কে উপভোগ করি।

ছবি গুগলথেকে নেওয়া।  
ঘটনা জীবন থেকে নেওয়া। 

Monday, November 18, 2019

কবিতা

বিষাদের প্রার্থনা




চলে তো যাচ্ছে, চলে যাক যে ভাবে গ্রীষ্ম আসে,
তারপর ভীষণ উত্তাপে খরাতে জ্বালিয়ে!
দগ্ধ করে ধরণী রানী কে - ফিরে যাবে সে।

দুই চোখে জল নিয়ে নেমে আসবে বর্ষা,
সে কি অশ্রুপাত! যেন প্রিয় হারা কান্না।
ভালোবাসার প্রবল স্রোতে ভাসিয়ে,
ভিজিয়ে দিয়ে সবুজ অরণ্য, সেও চলে যায়!

মাথার উপর বিশাল শূন্যতা নিয়ে, নীল শাড়ী পড়ে
মেঘের পরতে পরতে, কাশ ফুলে'র কমলতা নিয়ে
আসে, মেঘ কন্যা আকাশ রাণী শরৎ ।
কাশ ফুলের কোমল কেশর বিছিয়ে -
ধরিত্রী মাতা তাকে গ্রহণ করে।
মেঘ রাণী সেও ফিরে যাবে,
যেভাবে গ্রীষ্ম, বর্ষা সময়ের স্রোতে হারিয়েছে।

হিম শীতল বাতাসে করুন সুর নিয়ে,
কোথা থেকে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে-
ছুটে আসে হেমন্ত, দিকে দিকে
নবান্নের উৎসব, ডুগি তবলা আর ঢোল!
চাঁদের জ্যোৎস্না আকাশের বুক ফেঁড়ে ছিটকে পরে
মাটিতে!
লাঠির বুকে লাঠির করঘাত,শিশির ভেজা দূর্বা ঘাস।
উৎসুক চোখ চেয়ে আছে, খেলছে লাঠিয়াল।
নিভু নিভু প্রদীপ শিখা,
ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই।

তাই মুঠো খুলে চেয়ে আছি, কুয়াশার চাদরে
ওই, এলো কে!
ছমছম নীরবতা, শীতল বায়ু ছুটে আসে
খেজুর রসের কলস কাঁধে করে।
প্রকৃতি ঢেকে যায় কুয়াশার আড়ালে।
তবুও স্বার্থহীন চাঁদ, আলো দিয়ে যায়,
আমার মেঠো পথে, দিঘীর জলে।
রুক্ষতা যেনো ঘিরে ধরে,
বুড়ো বটবৃক্ষটা থরথরিয়ে কাঁপে।

চাঁদ আসে চাঁদ যায় -
ঋতু রাজ ছুটে আসে, ধরত্রীর পাতা ঝড়া শব্দে।
গাছে গাছে পাখি ডাকে, ফুল ফুলে বাসর সাজায়
গঙ্গা ফড়িং টা লেজ নাচিয়ে নাচিয়ে,
ঋতু রাজ কে প্রণাম জানায়।

আসা যাওয়ার এই খেলাতে, বেঁধে রাখা না যাই।
যে যাবার, সে তো চলে যায়।
বিবেকের কাছে রেখে যাই কিছু আহত প্রশ্ন?
উত্তর, জানা নাই!

যে এসেছে, সেই চলে গেছে,
রেখে গেছে কিছু মায়া।
সে মায়াতে ক্ষয়ে যাচ্ছে হৃদয় ও কায়া।
লিখে যাচ্ছে, পেয়ে হারাবার, সে কি যন্ত্রণা।
যে না পেয়েছে, সে কি কভু জেনেছে?
পেয়ে হারাবার সে কি ব্যাথা!
তবুও ভালো থাক, ভালো থাকার তরে
অপরেরে, ব্যাথা দিয়েছে যে প্রিজনে।

শুণ্য হোক ঋতু পরিবর্তনের ন্যায়,
প্রিয় হারা যন্ত্রণাতে।
ফিরে ফিরে আসুক,
আরও ভালোবাসা সাজিয়ে,
নতুন সব হাতে হাত রেখে।
ফিরে ফিরে যাক, পরিবর্তনের হাত ধরে।
তুমি কখনো পূর্ণ হবে না, ভালোবাসার ভূবণে।

তোমার জম্ম দিনে, থাক প্রার্থনা
ইশ্বরের পদতলে -
ব্যাথার অমৃত তোমায় পান করিয়ে।
বাঁচিয়ে রাখেন যেন সহস্র বছর ধরে।

ডিজিটাল জলরং 
অরণ্য নাসিদ 
১৮-১১-১৯

Friday, November 15, 2019

অভিনয়

 
অরণ্য নাসিদ 

ক্লান্তিতে নুয়ে পড়েছে বুড়ো বট বৃক্ষ,
অথচ একদিন শত মানুষ কে ছায়া দিয়েছে, 
একদিন বুক আগলে দাঁড়িয়ে ছিলো,
 ঝড়ের তান্ডব উপেক্ষা করে। 
আজ সে বৃদ্ধ,  ডাল গুলো শুকিয়ে গেছে। 
নুয়ে পড়েছে, পাতা গুলো নিষ্প্রাণ তার। 
পাখিরাও আসে না, এখন আর। 
এক ঝাঁক সাদা বক রোজ নিয়ম করে, 
রাত্রি যাপনে আসতো এই বৃক্ষ শাখায়। 
আজ তারা খুজে নিয়েছে নতুন নিবাস। 
মানুষ গুলো রোজ কুড়াল দিয়ে আঘাত করে, 
অথচ এক সময়,
 শীতল ছায়াতলে কত ক্লান্ত শরীর এখানে নুয়ে পড়ত। 
কেউ এখন খোজ রাখে না,  তার! 
সামান্য বাতাসে ভেঙ্গে পরে,  কুড়ালের আঘাতে 
ক্ষত হওয়া শাখা প্রশাখা। 
এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে প্রবীণ বট বৃক্ষ। 
সময়ের প্রয়োজনে, কত জন আপন হয়! 
অসময়ে সে জন কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। 
আসলেই কেউ আপন নাই, শুধু সময়ের প্রয়োজনে 
আপন হবার অভিনয় ।

Tuesday, November 5, 2019

কবিতা- মুক্তিযোদ্ধা

মুক্তিযোদ্ধা 

বিষাদের বিষ যতই পান করাও, আমি মৃত্যুর পর পুনরায় ফিরে ফিরে আসবো, এ আমার অঙ্গীকার। 

স্লোগান করো-
 দেওয়ালে দেওয়ালে ছেপে দাও, নিষিদ্ধ আমি। 
তোমার শহরে, আমার পদচারণ অবৈধ্য।
মোড়ে মোড়ে, কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে নাও,
সময় বড় কম, একবার শুধু একবার যদি 
তোমার ওই বেষ্টনী ভেদ করি! 

সময় এখন তোমার পক্ষে, জীবন এখন 
তোমার জয় গান করে, তুমি এখন অপরাজেয়। 

এখনি সময় -
আমার পাড়া, আমার মহল্লা উচ্ছেদ করো। 

বন্দুকের নল উঁচিয়ে, তাঁক করো আমার বুকে 
টিগারে আঙ্গুল রেখে কি ভাবছো ? 
শত্রু তোমার সম্মূখে, অস্ত্র তোমার হাতে। 

মনে রেখো,
শত্রু এবং অস্ত্রের প্রতি বিশ্বাস রাখতে নেই। 
সময় বহমান,  অস্ত্র হাত হতে হাতে পরিবর্তনশীল। 
তুমি যদি আমার শত্রু হও, 
আর তোমার হাতের অস্ত্র যদি, আমার হাতে থাকে। 
শুধু আওয়াজ উঠবে, শুধু আওয়াজ। 

শত্রু কে সামনে রেখে সময় নষ্ট করার মতো, বোকামী আর কি হতে পারে! 

সময় আছে আমাকে ধ্বংস করো, 
আমার দেশের প্রতিটি ঘরে, আমি লুকিয়ে আছি। 
প্রতিটি মায়ের আঁচলের তলে, আমি স্নেহ পেয়েছি। 
মায়ের দীর্ঘ নিঃশ্বাস, আমাকে কাঁদায়। 

তোমার শহর আক্রমণের পূর্বে আমাকে ধ্বংস করো। 
একশ চুয়াল্লিশ ধারা জারি করো,  
মোরে মোরে তোমার লেলিয়া দেওয়া কুকুর বসিয়ে রাখো। 
দেখলে আমায় গুলি করার অনুমতি দাও -
মনে রেখো ৪৭ এ মরেছি, ৫২তে মরেছি 
৬৯ ও ৭১ এ ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বুক পেতে দিয়েছি। 
যত বার এই দেশের মাটি কলঙ্কিত হবে 
ততবার ফিরে ফিরে আসবো । 
আমি ৪৭, আমি ৫২, আমি ৬৯, আমি ৭১ 
আমি যুগ যুগান্তর। 
আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমি বাঙালী 
বাংলাদেশ আমার স্বর্গভূমি।

Monday, November 4, 2019

কবি ও কবিতা


কবি ও কবিতা 
০৫/১১/১৯

আমি একজন কবি,  কবিতার অঙ্গ জুড়ে -
যে অলংকার দেখছো, তা আমার সৃষ্টি। 
শব্দ কে জব্দ  করে,  পরশ পাথরে ছুঁয়ে 
কবিতার অঙ্গে নতুন শব্দ স্থাপন, আমার স্বপ্ন। 
তোমারা হয়তো, কবিতার প্রেমে বিভোর হ'ও 
কবি'র প্রেমে পড়েছো কি? 

তোমরা কবিতার হাসিতে হাসো, 
কবি'র হাসি শুনেছো কি? 
সে হাসি নিষ্পাপ, কিন্তু নিষিদ্ধ এই শহরে। 

কবিতার বিরহে অশ্রু বিসর্জন করো, 
কবি'র বিরহ ছুঁয়ে দেখেছো কি? 
বিরহের গাঢ় নীল, কতটা জমাট বেঁধেছে! 
কত স্বপ্ন ধ্বংসের পর, আবেগ গুলো 
কালি হয়ে রক্ত বমি করেছে! 

দেখনি,  যদি দেখতে! 
তবে জানতে -
কত বিরহ বৎসর পেড়িয়ে, 
কত অনলে নিজেকে পুড়িয়ে, 
এক একটি শব্দ রচিত হয়। 
কত নিশি নিদ্রাবিহীন জেগে থেকে, 
খোলা আকাশের নিচে বসে, 
কত প্রেম বিলীন করে - 
চাঁদের সাথে কবি'র সখ্যতা হয়।

তোমরা যাকে ভাবছো-
আমার কবিতার প্রতিটি শব্দে, 
কখনো প্রেমে, কখনো অভিশাপে জর্জরিত, 
যে প্রতিবিম্ব হয়ে নিজেকে প্রকাশিত হয়
সে কবিতা । 
হা, সে কবিতা। 

আদরে কিংবা অনাদরে,  ক্ষোভ কিংবা সমার্থনে
একজন কবির ভাষা, কবিতা। 

সে'ই কবিতা, ছুটে চলে 
হাত থেকে হাতে বদল হয়,
ভাষা থেকে ভাষান্তর হয়। 
কোথাও বেশ সমাদরে 
কোথাও বেশ ঘৃণাতে 
কবিতা ছুটে চলে,  লোক লোকান্তরে। 

কেউ খুব যত্ন করে,  
কেউ বা  ছুড়ে ফেলে নর্দামাতে। 
কেউ কেউ তো আবার, 
ঝাল-মুড়ির ঠোঙ্গা হিসাবে ব্যবহার করে। 

তবুও স্বার্থপর কবিতা -
ফিরবেনা কবি'র আলোহীন ছোট্ট ঘরে! 

যেখানে বসে,
 কবি তার এক পৃথিবী আবেগ দিয়ে -
শব্দ দিয়ে সাজিয়েছিল কবিতা'রে। 

আজ কবিতা যুবতী, 
দিকে দিকে তার কত নাম ডাক -
কত প্রেমিক, কত বিদ্রোহী, কত উম্মাদ 
কবিতার আলিঙ্গনে প্রশান্তি খোঁজে। 

অথচ 
যে নাবিক তাকে অসীম সাগরের মধ্য হতে 
নিজ হাতে সাজিয়েছিল, একটু 
প্রশান্তি পাবার আশাতে। 
তার নিঃশ্বাস এখন ভারি হয়ে আসে! 

অথচ 
সে লিখেছিল একদিন, 
কবিতা আছে যতদিন
আমার মৃত্যু নেই ততদিন। 

কবিতা অমরত্ব খুজে নিয়েছে, 
কবি সেইপাড় বাঁধা পুকুর ঘাটের পাশে 
বকুল ছায়ার নিচে ঘুমিয়ে আছে। 

তোমরা যে কবিতার ছন্দে উল্লাসিত, 
কিংবা অশ্রুসিক্ত। 
বিক্ষোভে তোমাদের কন্ঠে যখন উচ্চারিত হয়
"মহা বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত,আমি সেই দিন হব শান্ত "
খুজে দেখো বন্ধু,  সে কবিতার অঙ্গে
মিশে আছে কবির বিদ্রোহী সত্তা! 

যার সৃষ্টির প্রেমে মুগ্ধ হও,
 তারে প্রেমে পড়ে দেখো একদিন-
তুমি নিজেই কবিতা হয়ে যাবে।
অতপর,  তুমিও শব্দের অলংকারে অলংকৃত হবে।
তারপর - 
কবি কোন এক সাহিত্য মেলা কিংবা প্রকাশনীতে 
দু- মুঠো অন্ন জোগাতে, তোমাকেও দিয়ে আসবে। 

(অরণ্য_নাসিদ) 
ছবিঃ মোবাইলে ধারণকৃত

এলোমেলো চিন্তা ও একটি আত্মার স্বপ্ন

এক আত্মার কল্পনা 

সূর্য অজানাতে ডুব দেওয়ার পর যেমন, প্রকৃতি রক্তিম মেঘে আলোকিত করতে চেয়ে ব্যার্থ হওয়ার পর, রাতের অন্ধকারের চাদরে ঢেকে যায়। তেমনি আমার চারিপাশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।  পায়ের নিচ হতে ক্রমশ, যন্ত্রণা টা খুব ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠছে।  ঝাপসা হয়ে উঠচ্ছে আমার চারপাশ,  কান্না আর প্রার্থনা ভেসে আসছে। আতর  সুগন্ধি র তীব্র ঘ্রাণ, অথচ এক সময় এতো তীব্র সুগন্ধি ব্যবহার করে, আমার পাশে আসতো না।  শরীর টা খুব ব্যথা,  কেউ ছুঁয়ে দিলে চিৎকার করতে ইচ্ছে হচ্ছে।  বয়স হয়েছে  লোক লজ্জার ভয়ে চিৎকার করতে পাড়ছি না।  
  ভীষণ পিপাসা পেয়েছে,  কলিজা 'টা যেন শত শত বছর জলের সংস্পর্শে আসে নি।  সবাই ব্যস্ত!  আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে সাহায্য করার মত কেউ এখানে নেই।  অথচ এরা'ই নাকি আমার আপন!  
 কি ভয়ংকর এক স্বপ্ন দেখলাম মাত্র,  চোখের সামনে থেকে কোন মতে দৃশ্য টা দূরে সরে যাচ্ছে না। 

 হঠাৎ বাড়িতে এতো মানুষের আনাগোনা, সবার মুখে আমার নাম।  এক টু অবাক হলাম, এরা কি পাগল হয়ে গেছে?  হাসি পাচ্ছিল, তাদের কর্মকান্ড দেখে৷ 
 কিন্তু শত চেষ্টা করেও হাসতে পারেনি,  খুব ব্যথা শরীরে।  প্রতিটি শিরা উপশিরাতে। একটু উষ্ণ পানিতে গোসল দিতে পারলে,  হয়তো ভালো লাগতো।  এ 'কি এ যে মেঘ না চাইতে বৃষ্টি!  
 কয়য়েক জন কে দেখলাম উষ্ণ পানি নিয়ে আসছে এই দিকে।  
 আমি ক্লান্ত জেনে হয়তো,  অবাক হলাম তখন, যখন আমার শরীরে মানুষ গুলো উষ্ণ পানি ঢেলেছে।  অথচ আমার ক্লান্তি দূর হচ্ছে না।  আমার ক্লান্তি যেনো বেড়েই চলেছে।  আর মানুষ গুলো খুব যত্ন করে যখন আমার শরীরে হাত দিচ্ছে,  যেন পাখির পালকের ছোঁয়া, তবুও তীব্র ব্যথায় কাতর হয়ে আমি চিৎকার করছি!  কেউ যেন কর্ণপাত করছে না।  আতর আর কপূরে ছেয়ে গেছে আমার আদরে বেড়ে ওঠা শরীর।  এর পর আমি আর ও বিমোহিত যখন দেখি আমার প্রিয় জনেরা আমাকে কাঁধে করে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছে!  আমার প্রিয় ঘর বাড়ি তিল তিল করে জমিয়ে রাখা স্মৃতি!  আমার ঘরে আমার প্রবেশ নিষেধ করা হচ্ছে।  
 অন্ধকার মাটির নিচে আমার দেহ কে রেখে সকলে চলে যাচ্ছে,  অথচ একদিন ও বাড়ির বাহিরে রাত বেশি হলে এরা চিন্তিত হতো।  আজ অনায়াসে রেখে চলে যাচ্ছে মানুষ গুলো।  আমি কি করে যাই, আমার শরীর রেখে? যে শরীরে বাসা বেধে কাটিয়েছি এতো গুলো বছর।  সে শরীর রেখে চলে যাবো কি করে।  আমি র'য়ে যাই অন্ধকার কবরে।  আলো উঠলে ফিরে যাবো। 
 আলো তো আর উঠলো না!  সূর্য এর দেখাও মিলল না।  আজ অনেক দিন হয়ে গেছে কেউ দেখতে এলোনা। 
 এখন আর শরীরের মায়া নেই,  মাটিতে বিলিন হয়ে গেছে।  অন্ধকারে যত্ন করার সময় হয়নি।  ছোট্ট জীবনের ভুল ভ্রান্তি হিসাবে খুব ব্যস্ত ছিলাম।  ইশ্বর দূত প্রেরণ করেছে।  এক দিনের ছুটি মিলেছে।  তাই নিজের ঘর বাড়ি আর প্রিয় জন দের দেখতে এসেছি।  সবাই দেখলাম দিব্যি আছে,  আমি নেই আমার ঘর টা আজ দখল,  বেশ পরিপাটি,  অথচ এলো মেলো আর অগোছালো থাকতো এই ঘর 'টি এক সময়।  দরজা টা দেখি তালা দেওয়া।  চাবি টা যে কোথায় রেখেছি?  ফিরে যাচ্ছি,  চাবি খুজতে।  সবার সাথে দেখা করলাম কুশল জানতে চেয়ে প্রতি উত্তর পেলাম না।  কেউ আমার কথার জবাব দিলো না।  সম্ভাবত তারা ভাবছে আমি ঘরে চাবি চাইবো!  
 এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কথা,  ওই দিকে বাঁশি তে ফুঁ দিচ্ছে দূত।  ফিরে যেতে হবে সেই অন্ধকার নিবাসে।  
 সে দিন যাকে খারাপ স্বপ্ন ভেবেছিলাম সে যে আমার স্বপ্ন ছিলো না।  ছিলো আলোকিত পৃথিবী হতে শেষ সময়।




ছবিঃ গুগল 

Saturday, November 2, 2019

বে-খেয়ালি চিঠি

১৮'ই আশ্বিন ১৪২৬
অ'প্রিয়, 

মনের মাঝে গেঁথে থাকা ধুতরা ফুলের শুভেচ্ছা গ্রহণ করো।  গোলাপের শুভেচ্ছা প্রেরণ করে,  গোলাপের পবিত্রতা হরনের দায় ভার গ্রহণ করতে পারবো না বিধায়, সে শুভেচ্ছা হতে তুমি বঞ্চিত।  যদিও জানি অনেকে তোমার বায্যিক রূপের মোহে তোমাকে কত উপমা'তে সাজাতে চাই!  তারা যদি সত্যিকার তুমি কে জানতো, তবে হয়তো। 
 থাক সে সব কথা,  আজ কয়দিন হলো বৃষ্টি হচ্ছে।  অথচ শরৎ কালে এই ভাবে বৃষ্টি হবার কথা ছিলো না।  শরৎ ' র চোখের জলে নিজেকে ভিজিয়ে তোমাকে লিখতে বসা।  অভিযোগের ডায়েরি থেকে। 

শরৎ'র আকাশ'টা এখন ঘন ঘন কাঁদতে বসে,  খুব যত্ন করে, সুর করে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে।  বায়না ধরে, না পাওয়ার যন্তনা নিয়ে, যেভাবে আমার ছোট্ট মেয়েটি কাঁদে দীর্ঘ সময় অব্ধি। 
   অথচ শরৎ আকাশের,  এই ভাবে কাঁদার কোন প্রশ্নই আসে না! 
প্রকৃতি পরম মমতায় শরৎ কে উজাড় করে সৌন্দর্য দিয়েছে। 
 " দু-চালা কুঁড়ে ঘরের  ঘর দেখেছো কখনো"
একবার আমাদের গ্রামের থেকে বেশ দূরে এক গ্রামে,  মায়ের নিকট বর্তী এক আত্মীয় ' র মৃত্যু লাশ দেখতে গেছিলাম। লাশ বলতে মনে পড়ে গেলো স্বজন হারা "মানুষের আর্তনাদ "।  আমি মানুষের আর্তনাদকে সহ্য করতে পারি না, বুকের মাঝে পাথর সম ব্যথা অনুভূতি হয়।  তাই মৃত্য মানুষের লাশ দেখতে যাই না। তো' সে দিন মা' খালাদের স্বজনহারা আর্তনাদ আমি সহ্য না করতে পেরে, ছুটতে ছুটতে বহু দূর চলে গেছিলাম।  চোখের সামনে এক দু-চালা মাটি ও খড়ের বাড়ি দেখলাম।  অন্য কোন একদিন সে বাড়ি নিয়ে লিখবো।  আজ আর সেদিকে না যাই, শুধু সেদিনের সে রূপ প্রকাশ করতে হলে আমার আজ রাত শেষ হবে।  এতো টুকু'ই বলবো,  গ্রামের এক জন কৃষকের বাড়ি ফুল গাছের বাগান আর নৈপূনতার যেমন কোন কমতি থাকে না।  যতটা সুন্দর তোমাদের শহরের মানুষের কল্পনাতীত ততটা সুন্দর করে,  প্রকৃতি প্রলেপ লেপ্টে দেয় শরৎ এর রূপে। 
   তবু ও দেখো স্বজন হারা হয়ে আর্তনাদে দুক'ড়ে দুক'ড়ে কাঁদছে।  কি'যে তার শূন্য,  কি'তার বিষন্নতা  কেউ জানতে'ও চাই না।  সকলে শরৎ এর রূপ দেখে,  কাশফুলের ছোঁয়া পেতে উম্মূখ হয়ে ওঠে। 

  অথচ,  শরৎ এর আকাশ কে কেউ কোন দিন প্রশ্ন করে না,  কি ব্যথার বেদনে সে বিভোর?  

আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়,  আমার মত'ই আকাশের কোন প্রতারক তুমি ছিলো কি'না?  

    যাই হোক তুমি কেমন আছো? নিজের স্বার্থের জন্য যে সব উজাড় করে বিলিয়ে দিতে জানে,  তার তো আর খারাপ থাকার প্রশ্ন' ই আসে না।  তুমি নিশ্চয় ভালো আছো? 
কি ভাবছো?  তুমি ভালো থাকো এটাই আমি চাই! 
প্রশ্ন'ই আসে না!  আমি অত'টা উদার নাই।  
যে আমাকের গ্রীষ্মের দাবানলে দহন করবে,  তার আকাশে বর্ষার মেঘ হয়ে বর্ষিত হব!  বরং চৈত্রের কঠিন রবিরাজের অগ্নিপথে বাতাস হয়ে প্রবেশ করবো।  যেমন টা কামাড় লোহা কে কয়লা'র উপর রেখে অক্সিজেনের অবাদ প্রবেশের জন্য আগুনকে জ্বালতে সারাদিন শ্রম দেয়। 
আজ অনেক অভিমান অভিযোগ মনের অভ্যন্তরে ধাক্কা দিচ্ছে,  কলমে আর কাগজে অশ্রু হয়ে জমা হচ্ছে।  গত চারটি বছর কখনো ভুল হয়'নি, কিংবা শত প্রচেষ্টা করে ও তুমি আটকে রাখতে পাড়নি আমাকে সর্ব প্রথম অভিনন্দন জানতে তোমার জম্মদিনের।  
  অথচ এই প্রথম তোমার জম্মদিন আসছে, (আগামী কার্তিকে)  অথচ আমার কোন পরিকল্পনা নেই।  
অবশ্য তুমি আমার কোন কিছু'তে নেই।  আছো অভিযোগ আর অভিশাপের খাতাতে।  তোমার প্রতি আমার অভিযোগ গুলো মিথ্যা ছিলো না কখনো,  নিজেকে পরিবর্তের চেয়ে নিজেকে বিলিয়ে দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছো।  এখনো তাই করছো৷  
তোমাকে লিখতে চাইলে যেনো লিখে যেতেই ইচ্ছে হয়।  যদি ' ও জানি তুমিবকোন দিন পড়বে না।  আর ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কখনো কোন ভাজ হয়ে থাকা পৃষ্ঠা 'ই পেয়ে যাও।  নাম পরিচয় হীন চিঠি,  তবে সে'দিন ও তোমার বুঝতে  ভুল হবে না এই চিঠি র মালিক যে তুমি'ই,  এক কথা মনে করতে।  
 কারন বিশ্বের একমাত্র আমি' ই যে কিনা, তার প্রিয় মানুষের আঁখি পাতে শরৎ'র আকাশের ন্যায় অবিরাম জলধারা বয়ে যেতে দেখতে চাই।  আমি জানি সেদিন এই চিঠি পড়ে তুমি বিরক্ত বোধ করবে।  তার চেয়ে বেশি বিরক্ত বোধ করবে ' জ্যোৎস্নার আড়ালে যে বিষ ধারণ করে চাঁদ' শিরোনামের গল্প পড়লে।  তোমার চরিত্র গুলো বাস্তব তুমির সাথে মিলিয়ে পাঠক সমাজে যতটুকু নোংরামি প্রকাশ সম্ভাব ততটুকু প্রকাশ করবো।  হয়তো সম্পূর্ণ তোমাকে প্রকাশ করলে পাঠক সমাজে আমাকে চটি লিখক নামে আখ্যায়িত করা হতে পারে।  কিংবা অশ্লীল বই লিখার অপরাধে জেল জরিমানা হতে পারে।  সে ভয়ে তোমাকে প্রকাশ করতে পারেনি।  যদি প্রকাশ করা সম্ভাব হতো, তবে তোমাকে জম্ম দেওয়ার অপরাধ বোধে এই পৃথিবী, অন্য কোন গ্রহের সাথে স্বংঘর্ষিত হয়ে ধ্বংস  হবার চেষ্টা করতো। নিজের সম্পর্কে এতো নষ্ট সত্য কেউ সহ্য করতে পারবে না কোন দিন।  এমন 'কি তুমিও না। 
যতই লিখবো না ভাবতেছি তত'ই,  তোমাকে নিজের মাঝে আবিষ্কার করছি।  তাই ইচ্ছের বুকে মাটি চাপা দিয়ে শেষ করছি। 

 ভালো থাকার প্রর্থনা তোমাকে অনেকে করে, আমি করবো না। তুমি বরং কয়লা'র অগ্নিতাপে লোহা'র মত অগ্নিদগ্ধ হ'ও প্রতিনিয়ত। 

                                             ইতি
                                   তোমার অভিশাপ

ছবিঃ গুগল

Friday, November 1, 2019

কবিতা - বিলীন হতে'ই বেঁচে থাকা







বিলীন হতে'ই বেঁচে থাকা 
০১/১১/১৯

আগুন ছুঁয়ে দিলে, হাত পোড়ে ; দগ্ধ হই! 
ভুলে যাই সে ব্যথা। 
ভুলে যাই, সাঁঝের বেলা 
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালতে হয় সে  কথা ।

মাঝ রাতে চন্দ্র কথা , কাকে গল্প বলি 'বল ?
কে বা আর, মধ্যরাতে গল্প শুনতে চাইবে ?

শূন্যে শব্দে ছুড়ে দিই , 
শূন্য থেকে প্রতিশব্দ শুনি , কান পেতে ।
শূন্যে চেয়ে থাকি, শূন্যে শূন্য দেখি! 

দুধের সাগরে  ডুব দিয়ে , যে চাঁদ জ্যোৎস্না দিচ্ছে,  
তার দিকে ফিরেও চাই না ,  এখন আর! 
কেউ তো প্রশ্ন করবার  নেই, এখন
বলতো কে সুন্দর? আমি না চাঁদ! 

প্রতি উত্তর ছিল-  'চাঁদ'

বড় অভিমানী ছিলি তুই! 
কবিতা কিংবা কথাতে,
 কখনো অন্য কারও প্রশংসা
সহ্য হতো না তোর। 
তা'আমি জানি! 

অভিমানে কিছু সময় নিশ্চুপ থেকে ,
নিজেই বলতিস -

আচ্ছা, চাঁদ কি আর আমার মতো হাঁসতে জানে?  আমার মতো - 
তার কি সুন্দর দুইটা  চোখ আছে ? 
নাকি সে ভালবাসতে জানে? 
সে কি আর তোর অধরে অধর ছুঁয়ে ' 
শিহরণ তোলে? 
আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে, দূরে পালাতে যানে? 
না'কি নীল শাড়ী, অঙ্গে পেঁচিয়ে 
চুড়ি নিবে বলে বায়না ধরে? 
সে কি আর আমার মত,  অভিমান করে? 

আমি হাসতাম, আর হাসতাম। 

ভাবতাম'ও বটে ; এ কি শুধু অভিনয়? 
নাকি ভালোবাসার আহ্লাদী অভিলাষ! 

আজ আর ভুল করেও মনে করি না ' 
ভুলে ভরা সে সময়।  
জেনে 'তো' গেছি সব'ই ছিলো অভিনয়। 

চাঁদ আমাকে রেখে হারিয়ে যায় নি, আজ'ও 
অথচ তুই !

নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়েছি , তোকে'ও। 
শূন্যে দেখি নিজেকে , শূন্যে ভাসি 'শূন্য হয়ে ।
কি যেন হয়েছে আমার! 

আমার মাঝে আমার, নেই তো বসত আর ।

আগুন ছুঁয়ে দিলে, হাত পোড়ে ; দগ্ধ হই! 
ভুলে যাই,  মূহুর্তে সে ব্যথা ! 
ভুলে যাই, সাঁঝের বেলা-
 সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালতে হয়, সে কথা ।

এখন শুধু মনে হয়, 
আমার মাঝে আমি থাকি না, অন্য কার ও বাস। 

আমি যেনো, কষ্টের মৃত্তিকা কামড়ে ;
ঠাঁই রোদ্দুরে পুড়ে যাওয়া - 
অথচ পথিকেরে পরম মমতায় 
ছায়া দান কারি,  অশ্বত্থ বৃক্ষ। 
যার অনুভূতি আছে, কিন্তু প্রকাশের ভাষা নেই। 
যার ব্যথা আছে, কিন্তু অশ্রু নেই। 
যার আকুতি আছে, কিন্তু কোন মিনতি নেই। 
যার প্রার্থনা আছে, কিন্তু আকাঙ্ক্ষা নেই। 
যে বেঁচে আছে শুধু বিলিয়ে দিতে, 
আর বিলীন হতে।


অরণ্য নাসিদ 
ছবি - গুগল 

কবিতা - কুঁড়ে ঘর

কুঁড়ে ঘর


একটা ভাঙা কুঁড়ে ঘরের স্বপ্ন ছিলো,
তাল পাতার ছাউনিতে ঢাকা ছিলো ,
রাতের আধারে মেঘের বুক চিরে,
জ্যোত্স্না উঁকি দিবে কথা ছিলো।
বর্ষার আকাশ কেঁদে কেঁদে আমাকে
স্লান করাবে , এমন ও স্বপ্ন ছিলো ।
কথা ছিলো জোনাকির সাথে ,
কথা ছিলো রাত জাগা পাখির সাথে।
কথা ছিলো হাসনাহেনা ও শিউলীর সাথে ।
কথা ছিলো কোটি কোটি তারার সাথে ।
কথা ছিলো আধারের সাথে ,
কথা ছিলো কুড়ে ঘরের স্বপ্ন দেখবো বলে ।
কথার গলে , বিষের মালা , আমি এক ছন্নছারা ।
সব কথা ছুড়ে ফেলে , নিজেকে নিজে করেছি বড় অবহেলা ।
আজ এই রাত সাক্ষী , আবার কোন এক শরত্ এ ঘুম হরণকারী-
চাঁদের আলোতে কথা দিবো ।
সত্যিই আমি কথা দিবো , একটা
ভাঙা কুঁড়ে ঘর, তোকে দলিল করে দিবো ।
তালপাতার সে ছাউনি , টিপ টিপ
বৃষ্টির ফোঁটা , রাত জাগা কল্প কাহিনী ।
আঁধারের বুক চিরে , কদম-কেয়া, জুঁই বেলীর সৌরভ মাখা সেই রাত।
আমার আজম্ম পাপ, বৃষ্টির ছন্দে
তোর শীত্কার - ফুল হীন সে ঘর ।
অথচ বুনো ফুলের সৌরভ -
তোর আর আমার ফুলশর্য্যার সে রাত।
একটি মাত্র ভাঙা কুঁড়ে ঘরের দলিল
তোর হাতে আমার হাত ।
ভালোবাসায় কেটে যাবে সহস্র রাত।



                                                               অরণ্য নাসিদ
ছবি - গুগল 

কবিতা -এলোমেলো আমি

এলোমেলো আমি
    অরণ্য নাসিদ




অভিমান ও অভিযোগ
ভালোবাসা ও ছলনা।
আমার দুই চোখ,
দেখে ভিন্ন ভিন্ন।
আমার দুই হাত
এক হাতে স্বর্গ, অন্য হাতে নরক।
কখনো ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে হয়,
কখনো দূরে হারিয়ে যেতে।
কখনো তোমাকে দেখি -
কখনো তোমার ছলনাকে।
কখনো ক্ষোভে অভিমানে হই হিংস্র,
কখনো তোমার আঁচলে মুখ লুকিয়ে ছোট্ট শিশু।
কখনো কখনো ইশ্বর মনে হয় নিজেকে-
সকল বাধাকে উপেক্ষা করে, সব নিয়ম কানুন-
পদতলে রেখে হাসতে ইচ্ছে হয় বিজয়ের হাসি।
কখনো কখনো নিজেকে বড় অপরাধী ভাবতে ইচ্ছে হয়।
মনে হয় জগৎ জুড়ে যতো পাপ, সব কারনে মিশে আছি আমি!
আমি যেন অলিখিত ইবলিশ শয়তান।
নিজেকে নিয়ে ভাবতে বড্ড ভালো লাগে এখন -
নিজেকে অবতার ভেবে! জনসস্মুখে মুচকি হেসে আসি ইচ্ছে হলে।
দিন ও রাত
সকাল ও সন্ধ্যা
পৃথিবীর কক্ষ পথে পা রেখে চলে
আমার অসঙ্গত ইচ্ছে ধারা।
আমার মস্তিক জুড়ে এলোমেলো চিন্তাধারা
আমি বোধ করি পাগল হয়ে যাচ্ছি।


ছবি- গুগল