Friday, November 1, 2019

কবিতা - বিলীন হতে'ই বেঁচে থাকা







বিলীন হতে'ই বেঁচে থাকা 
০১/১১/১৯

আগুন ছুঁয়ে দিলে, হাত পোড়ে ; দগ্ধ হই! 
ভুলে যাই সে ব্যথা। 
ভুলে যাই, সাঁঝের বেলা 
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালতে হয় সে  কথা ।

মাঝ রাতে চন্দ্র কথা , কাকে গল্প বলি 'বল ?
কে বা আর, মধ্যরাতে গল্প শুনতে চাইবে ?

শূন্যে শব্দে ছুড়ে দিই , 
শূন্য থেকে প্রতিশব্দ শুনি , কান পেতে ।
শূন্যে চেয়ে থাকি, শূন্যে শূন্য দেখি! 

দুধের সাগরে  ডুব দিয়ে , যে চাঁদ জ্যোৎস্না দিচ্ছে,  
তার দিকে ফিরেও চাই না ,  এখন আর! 
কেউ তো প্রশ্ন করবার  নেই, এখন
বলতো কে সুন্দর? আমি না চাঁদ! 

প্রতি উত্তর ছিল-  'চাঁদ'

বড় অভিমানী ছিলি তুই! 
কবিতা কিংবা কথাতে,
 কখনো অন্য কারও প্রশংসা
সহ্য হতো না তোর। 
তা'আমি জানি! 

অভিমানে কিছু সময় নিশ্চুপ থেকে ,
নিজেই বলতিস -

আচ্ছা, চাঁদ কি আর আমার মতো হাঁসতে জানে?  আমার মতো - 
তার কি সুন্দর দুইটা  চোখ আছে ? 
নাকি সে ভালবাসতে জানে? 
সে কি আর তোর অধরে অধর ছুঁয়ে ' 
শিহরণ তোলে? 
আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে, দূরে পালাতে যানে? 
না'কি নীল শাড়ী, অঙ্গে পেঁচিয়ে 
চুড়ি নিবে বলে বায়না ধরে? 
সে কি আর আমার মত,  অভিমান করে? 

আমি হাসতাম, আর হাসতাম। 

ভাবতাম'ও বটে ; এ কি শুধু অভিনয়? 
নাকি ভালোবাসার আহ্লাদী অভিলাষ! 

আজ আর ভুল করেও মনে করি না ' 
ভুলে ভরা সে সময়।  
জেনে 'তো' গেছি সব'ই ছিলো অভিনয়। 

চাঁদ আমাকে রেখে হারিয়ে যায় নি, আজ'ও 
অথচ তুই !

নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়েছি , তোকে'ও। 
শূন্যে দেখি নিজেকে , শূন্যে ভাসি 'শূন্য হয়ে ।
কি যেন হয়েছে আমার! 

আমার মাঝে আমার, নেই তো বসত আর ।

আগুন ছুঁয়ে দিলে, হাত পোড়ে ; দগ্ধ হই! 
ভুলে যাই,  মূহুর্তে সে ব্যথা ! 
ভুলে যাই, সাঁঝের বেলা-
 সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালতে হয়, সে কথা ।

এখন শুধু মনে হয়, 
আমার মাঝে আমি থাকি না, অন্য কার ও বাস। 

আমি যেনো, কষ্টের মৃত্তিকা কামড়ে ;
ঠাঁই রোদ্দুরে পুড়ে যাওয়া - 
অথচ পথিকেরে পরম মমতায় 
ছায়া দান কারি,  অশ্বত্থ বৃক্ষ। 
যার অনুভূতি আছে, কিন্তু প্রকাশের ভাষা নেই। 
যার ব্যথা আছে, কিন্তু অশ্রু নেই। 
যার আকুতি আছে, কিন্তু কোন মিনতি নেই। 
যার প্রার্থনা আছে, কিন্তু আকাঙ্ক্ষা নেই। 
যে বেঁচে আছে শুধু বিলিয়ে দিতে, 
আর বিলীন হতে।


অরণ্য নাসিদ 
ছবি - গুগল 

No comments:

Post a Comment