" আমি কেনো ভিন্ন!
তোমাদের চিরচেনা সমাজের কাছে? "
ঘটনা 'এক'
বকুল ফুলের মালা হাতে ১২ বছরে এক বালক ছুটছে।
মালা নিবেন, ভাইয়া মালা নেন একটা, আপু মালা নেন একটা।
পকেটে হাত দিয়ে দেখি আড্ডা শেষে দশ টাকা অবশিষ্ট। কিন্তু ফুলের মালা আমাকে নিতেই হবে।
কখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব হয় না, যে সকালে কর্মস্থানে ফিরতে এই টাকা আমার লাগবে। ওই সময় ওই বালক টির হাসি আমাকে ভুলিয়ে দেয়, আমার আগামীদিনের চিন্তা। ওর চোখে দেখি বিশ্বাস!
ও বিশ্বাস করে সৃষ্টি কর্তা ওই ফুলের মাঝে তার রিযিক লিখেছেন। আমি এই বিশ্বাসকে সম্মান করি, উপভোগ করি।
দশ টাকার যে কয়টা মালা হয় কিনে নিই। চাইলে দশ টাকা ওকে এমনি দিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু দেইনি!
কারন ও যেন ওর কর্মের সম্মানের মূল্য পাই। ওর বিশ্বাস যেন নষ্ট না হয়। যে ফুলের মালার মাঝে, রিযিক দাতা ওর রিযিক রেখেছেন। তাকে দশ টাকা এমনিতে দিয়ে, তার বিশ্বাস ভঙ্গের কারন হতে চাইনি। আমি ওর চোখে সৃষ্টিকর্তার প্রতি যে বিশ্বাস দেখেছি, যে পূর্নতা দেখেছি। তাতে করে আমার আর এক জনমে ফুল বিক্রেতা হয়ে জম্ম নিতে ইচ্ছে হয়।
ঘটনা' দুই'
আজ যখন আজমীর শরিফের ফিতা দেখলাম,( লালুশালু) হলুদ লাল ফিতা, এক সাধু নিয়ে বসে আছে। আমি যেয়ে জানতে চাইলাম, দাম কত?
সাধুঃ আপনার যা ইচ্ছে হয়
আমি কথা বলে হাত এগিয়ে দিই। যদিও আমার এই লালুশালু ফিতাতে বিশ্বাস নেই। এবং বিশ্বাস নেই ওই ব্যাক্তির (সাধু) বিশ্বাসের প্রতি বিশ্বাস। আমার বিশ্বাস আছে ওর মুখের হাসির প্রতি। ও হয়তো বিশ্বাস করেই নিয়েছে, পীরের অছিলতে আল্লাহ তার রিযিকের ব্যবস্থা করেছে। এই বিশ্বাস নিয়ে সে যে পরম তৃপ্তি নিয়ে হাসে। সে হাসির বর্ণনা হয়তো রবি ঠাকুর, কিংবা শরৎবাবু দিতে পারবেন। আমি অতি নগণ্য এবং আদিম { সভ্যতার পরিবর্তনের হাওয়া গায়ে মেখে চলে আর শেষ হয়ে গেলো সব শেষ হয়ে গেলো বলে চিৎকার করতে থাকা গুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাসে । }
{[( ওই দিকে সংস্কৃতি নামের অপসংস্কৃতি আমাদের বাঙালি শিকড় কে উবু করে *** দিয়ে যাচ্ছে )]}
এই দিকে আমি চেয়ে থাকি ওই সাধুর চোখের দিকে। মানুষের ভিতর কে জানতে হলে সরাসরি তার চোখের দিকে তাকান। সে সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে? মানুষের চোখ মিথ্যা বলেনা। আমি তার বিশ্বাসকে সম্মান করি এবং উপভোগ করি। তাই আমি সাধুদের কাছ থেকে ফিতা কিংবা বালা নিয়ে হাতে পড়ি। এতে আধুনিক সভ্যতার মানুষ কি মনোভাব প্রকাশ করে তাতে আমার কোন মাথাব্যথা নেই।
এ ধরণের অসংখ্য বিশ্বাসের ঘটনা, যা আমি উপভোগ করি।
অথচ,
তোমরা হয় সে নিয়ম মেনে নাও, আর না হয় উপেক্ষা করো।
কিন্তু,আমি
আমার মতো ছুটে চলি। যারা এই সমাজের হাতে জিম্মি না, কিংবা সমাজের নিয়মের নির্মম চাবুকের আঘাতে পৃষ্ট তাদের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি উপভোগ করি। কখনো কখনো শয়াতানের হাত ধরে নরকে আবার কখনো কখনো ইশ্বরের প্রেরিত দূতের হাত ধরে স্বর্গে করি বিচরণ। তবে আমি না ইশ্বরের নামে মিথ্যা বলি, আর না আমি শয়তান কে লেলিয়ে দিই মানুষের প্রতি। আমি আমার মতো মানুষের বিশ্বাস কে উপভোগ করি।
ছবি গুগলথেকে নেওয়া।
ঘটনা জীবন থেকে নেওয়া।
No comments:
Post a Comment