নিবেদন
১২/০৪/২০
মাননীয় রাষ্ট্রপতি,
এই মৃত্যুর মিছিলে একটা দাবি নিয়ে এসেছি
না, ভয় পাবেন না
আমি মাস্কের কাপড়ে নিজের মুখ ঢেকে রেখেছি
তিন মিটার দূরত্ব বজায় রেখে দাবি পেশ করছি।
না,করোনার ভয়ে না!
লজ্জায় ঢেকেছি মুখ, ঘৃণায় বজায় রেখেছি দূরত্ব।
আমার উদরে লেলিহান ক্ষুধার দাবানল -দাউদাউ করে জ্বলছে।
আমার দশ বছরের এক কন্যা সন্তান ছিলো,
সে আত্মহত্যা করেছে, শুনেছেন?
হয়তো বা হা, অথবা না!
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী যখন গদ্যময়!
আর সে গদ্যে-
দুই একজনের মৃত্যুর করুন কাহিনী যদি না থাকে!
তবে কি করে গদ্যের পূর্নতা আসবে?
গরীব পিতার ঘরে জম্ম নিয়েছিলো মেয়েটা,
কচি পেটে তার যে আগুন জ্বলেছে -
তা মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে হয়তো কষ্ট দায়ক ছিলো।
মরে যেয়ে ভালো'ই করেছে।
নতুবা, কোন ক্ষমতাসীন কেউ খাদ্যের প্রবঞ্চনায়
মেয়েটাকে'ই হয়তো ছিনিয়ে খেতো, শকুনের মত।
তার চেয়ে বরং মরণ শ্রেয়।
শুনেছেন? বৃদ্ধ রিক্সশাচালক আত্মহত্যা করেছে।
ভালো'ই করেছে!
গরীব হয়ে জম্ম নেওয়ার প্রায়শ্চিত্ত করেছে।
সবার করা উচিত, সকলের করা উচিৎ -
আত্মহত্যা করে ক্ষুধা নিবারণ করা।
আপনারা তো বলেছিলেন, এক বছরের খাবার মজুদ আছে।
আমরা বিশ্বাস করেছিলাম! অথচ ;
আজ দুই মাস যেতে না যেতে,
ক্ষুধার্ত মানুষের মৃত্যু বরণ করা ;
আপনাকে ভাবায় না? আমাকে ভাবায়।
হয়তো কাল একজন,
পরশু আর একজন ;
তার পর আমি।
এইভাবে আমরা সবাই প্রায়শ্চিত্ত করবো।
তখন কি আপনার লজ্জা করবে না?
নাকি আতুর ঘরে লজ্জা কেটে, মাটিতে পুতে রেখেছেন?
খাদ্যের অভাবে যদি মানুষ মরে,
খাদ্য মন্ত্রীর কি প্রয়োজন?
চিকিৎসা সেবায় যদি, এতো ত্রুটি থাকে;
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কি প্রয়োজন?
চোর, ধর্ষক,খুনি, পতিতায় যদি দেশ ভরে থাকে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কি প্রয়োজন?
কি প্রয়োজন?
দেশের কোটি কোটি টাকা নষ্ট করে,
মন্ত্রী পরিষদ গঠনের।
এর চেয়ে, স্বল্প টাকায় কিছু ভাড় রাখতেন; সকালবিকাল তারা গল্প বলতো,
আমরা শুনে "হো হো করে হাসতাম।"
মন্ত্রী আর ভাড়ের কাজে যে ফারাক-
তা যদি মন্ত্রীরা না জানে,
তবে মন্ত্রীর আসনে বসার অধিকার কে দিয়েছে?
মহামান্য রাষ্ট্রপতি,
আপনার কাছে অনুরোধ,
দলে দলে মানুষ আত্মহত্যা করে মরার পূর্বে ;
ক্ষুধার্ত মানুষ হিংস্র হবার পূর্বে ;
গরীব কথা বলার পূর্বে ;
বন্দুকের নল তাক করার অনুমতি দেন!
"একটা বুলেট, একটা গরীব"
স্লোগানে মেরে দিতে বলেন
এই শান্তশিষ্ট মানুষ গুলোকে।
জনস্রোতে প্রতিবাদের ঢেউ আসার পূর্বে,
গুলি করার অনুমতি দেন,
হে মহামান্য।
বড় বিনয়ের সাথে বলছি,
করোনা রোগীর বাড়িতে,যে লাল পতাকা উড়ছে।
সেই পতাকা-
চাল চোর, ধর্ষক, দেহ ব্যবসায়ী, মদ বিক্রেতার
বাড়ির ছাদে পতপত করে উড়ার পূর্বে।
রফিক আজাদের মতো, "ভাত দে হারামজাদা "
বলার পূর্বে, যদি গুলি না করা হয়
তবে যে বড় সর্বনাশ হয়ে যাবে।
অনুমতি দেন হে মহামান্য, ক্ষুধার্ত এই জন স্রোত
থামানোর এখন একটা মাত্র পথ
বন্দুক তাক করো, তারপর টিগার চেপে ধরো!
ক্ষুধা মুক্ত দেশ
শালা কোন ক্ষুধার্ত এই দেশে থাকবে না।
নিবেদন করি,
ক্ষুধার্ত উদরের তরে একটি বন্দুকের বুলেট বাজেট রাখেন।
( অরণ্য নাসিদ)
No comments:
Post a Comment